নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪

সেই সূচনা দাসের বিষয়ে মর্গ্যান কর্তৃপক্ষ যা বললেন

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০৪:২৮, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

সেই সূচনা দাসের বিষয়ে মর্গ্যান কর্তৃপক্ষ যা বললেন

বিশেষ ক্লাসের ১২ মাসের বেতন ৬ হাজার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহি মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সূচনা দাসকে নির্বাচনী পরীক্ষায় ৩ বিষয়ে ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।  সূচনা দাসের এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মর্গ্যান স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমে একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি ঘটনার আদ্যপান্ত তুলে ধরেছেন। তার বক্তব্যটি এখানে হুবহ তুলে ধরা হলো-

 

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী সূচনা দাসের কান্নারত ভিডিও দেখা গেছে। সূচনা দাস অত্র প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ‘গ’ শাখার শিক্ষার্থী। এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। পরবর্তী সময়ে তাকে অকৃতকার্য বিষয়গুলোতে পুনরায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়। দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও সে অকৃতকার্য বিষয়গুলোতে পাশ করতে পারেনি। 


উল্লেখ্য, এ বছর মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মোট চারশ’ তেত্রিশ জন শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দুইশ নব্বইজন কৃতকার্য হয় এবং একশ তেতাল্লিশজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। অকৃতকার্য সব শিক্ষার্থীদের মানবিক দিক বিবেচনা করে পুনরায় ফেল করা বিষয়গুলোতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়। যেখানে সূচনা দাসও তিন বিষয়ে ফেল করার কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী একশ তেতাল্লিশ জনের মধ্যে ঊননব্বই জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। চুয়ান্নজন অকৃতকার্যই থেকে যায়। যার মধ্যে সূচনা দাস একজন। তবে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বিশেষ মহলের প্ররোচনায় সে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করে। যে ভিডিওটি জনৈক সাংবাদিকের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করে ভাইরাল করার অনুরোধ করা হয়। সাথে সাথেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। 

 

সূচনা দাসের উপস্থাপিত বিভিন্ন মিথ্যা তথ্যের প্রকৃত সত্য হচ্ছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ মাসের বেতন নিয়মিত পরিশোধ না করেও বিনা বাধায় শ্রেণি কার্যক্রম-সহ সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।


প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুযায়ী নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পূর্বে যাবতীয় পাওনাদি পরিশোধ করতে হয় অথবা প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু সূচনা দাস তা করেনি।


জনৈক সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন, বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পরীক্ষায় তিন বিষয়ে ফেল দেখানো হয়েছে, যা মোটেও সত্য নয়।

 


প্রকৃত সত্য হচ্ছে, নির্বাচনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র ‘কোড-ডিকোড’ পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হয়। যেখানে কোন শিক্ষকের পক্ষেই কোন শিক্ষার্থীর পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে ফেল করানোর বিষয়টি অবাস্তব এবং ভিত্তিহীন। এছাড়া উল্লেখ থাকে যে চলতি শিক্ষাবর্ষে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সূচনা দাস ভালো ফলাফল করতে পারেনি এবং বেশ কিছু বিষয়ে সে অকৃতকার্য হয়েছিল। তাছাড়া সূচনা দাস নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য বিষয়গুলোর উত্তরপত্র অভিভাবকদের দেখানোর জন্যে আবেদন করে। তারপর প্রতিষ্ঠান-কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৮ নভেম্বর ২০২২ তারিখে তিনজন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেন এবং  ১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে শ্রেণি শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের রেজিস্টারে সংরক্ষিত সূচনা দাসের অভিভাবকের ফোন নম্বরে (০১৮৭১৫৮৬১৬০) ফোন করে খাতা দেখতে প্রতিষ্ঠানে আসতে বলেন। অপরপ্রান্ত থেকে ফোনটি সূচনা দাসের মামি রিসিভ করেন। সূচনা দাসের মামী পরের দিন প্রতিষ্ঠানে আসার কথা বললেও অদ্যাবধি (৫ই ডিসেম্বর, ২০২২) কেউ আসেনি।


 

সম্পর্কিত বিষয়: