নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪

ফতুল্লায় ভয়ংকর এই কিশোর সন্ত্রাসীদের রুখবে কে ?

প্রকাশিত:২৩:৫২, ২৯ এপ্রিল ২০২১

ফতুল্লায় ভয়ংকর এই কিশোর সন্ত্রাসীদের রুখবে কে ?

 
ওরা দিনকে দিন হয়ে উঠছে অপ্রতিরোধ্য,ভয়ঙ্কর। এদের বয়স ১৬ থেকে ২০ হলেও  কিশোর গ্যাং নামে এরা স্থানীয়দের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক।  চাঁদাবাজী, ছিনতাই, ইভটিজিং, মারামারি, লুটতরাজসহ নানা অপরাধ নিত্যদিনের ঘটনা তাদের কাছে।
 
দাপা বেপারি পাড়া, চন্দ্রাবাড়ী, শারজাহান রোলিং মিলস, রেল লাইন বটতলাসহ আশপাশ এলাকায় রয়েছে এদের অবাধ বিচরন। এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ বা নির্যাতিত হয়ে  মুখ খুললে বা আইনি সাহায্য নিলে ওই ভুক্তভোগিকে আরও বেশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
 
এই কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা হলো হাদী সুমনের ছেলে কুখ্যাত মোবাইল ছিনতাইকারী দূর্জয়, আবু তাহেরের দুই ছেলে মাদক ব্যবসায়ী তারেক ও আল-আমিন, মাদক ডিলার হেনার ছেলে রনি ওরফে ডিব্বু, মোবাইল ছিনতাইকারী মামুন ওরফে তিল্লু মামুন, মদ ব্যবসায়ী জলিলের ছেলে জয়, খোজপাড়ার সাহা মিয়ার ছেলে সানী এবং তার বন্ধু সৌরভসহ মাদকাসক্ত আরো ১৫ /২০ সদস্যের একটি দল। এদের প্রতি রয়েছে আবার দাপা বেপারীপাড়ার চিন্থিত বাংলা মদ বিক্রেতা জলিল ওরফে বাংলা জলিলের পুত্র জয়ের আর্শীবাদ।
 
এই মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাংয়ের  যন্ত্রণায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঠিক মতন বেতন নিয়ে বাসায় ফিরতে পারে না। একসাথে ছেলে-মেয়ে এমনকি ভাই-বোনও একসাথে রাস্তা দিয়ে চলতে পারে না। এই কিশোর গ্যাংয়ের দৃস্টি গোচর হলে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মারধর করে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সাথে থাকা অর্থকড়ি,মোবাইল ফোন সহ মূল্যবান সামগ্রী।
 
 হাটতে পারেনা, নির্জনে নিয়ে খারাপ অপবাদ দিয়ে টাকা দাবী করা হয়। মাদকের টাকা জোগাড় করতে এরা অনেক নিরীহ মানুষের পকেটে মাদক দিয়ে নির্যাতন করে এবং পরবর্তীতে গ্রামের আত্নীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশ যোগে টাকা নিয়ে আসে।
 
সাম্প্রতিক সময়ে এই কিশোর গ্যাং বাহিনী মাত্র ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে ফতুল্লা রেল লাইন বটতলায় এলাকায় চালিয়েছে ভয়াবহ তান্ডব।
 
জানা যায়, ফতুল্লা দাপা মাদকাসক্ত বখাটে দূর্জয়, আলামীন, সৌরভ, সুমন, তারেক সহ উঠতি বয়সী বেশ ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল বেশ কয়েকদিন ধরে রাত আটটার পর থেকে রেল লাইন বটতলায় এসে অবস্থান নিয়ে গার্মেন্টস ফেরৎ নারী শ্রমিকদের উক্তক্ত্য করে আসছিলো।
 
এ নিয়ে গত দুদিন পূর্বে স্পিনিং মিল শ্রমিক আহত পারভেজ সহ তার কয়েক সহোযোগি বখাটে কিশোর গ্যাং সদস্যদের এহেন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে।
 
এতে করে  কিশোর গ্যাং দূর্জয় বাহিনীর সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত তিন দিন (২৫ এপ্রিল) পূর্বে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে দেশীয় অস্ত্র- সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রেল লাইন বটতলায় এসে নিজেদের শক্তির জানান দিতে একাধিক দোকান-পাটের সার্টারে কোপায়।
 
এই সময় দোকানীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই দূর্জয়সহ  বাহিনীর অপর সদস্যরা সটকে পড়ে।
 
এ ঘটনায় একটি মার্কেটের মালিক পরদিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরও করেছিলো। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।বরং উল্টো বুধবার রাত ১০ টার দিকে দূর্জয় বাহিনীর সদস্যরা রেল লাইন বটতলায় এসে স্পিনিং মিলস শ্রমিক পারভেজকে এলোপাথারি ভাবে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।
 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পারভেজ তার কর্মস্থল থেকে বের হয়ে পায়ে হেটে পাকিস্তান খাদঁস্থ নিজ বাসায় ফেরার সময় রেল লাইন বটতল এলাকায় পৌছামাত্র অতর্কিত ভাবে জয়- দূর্জয় বাহিনীর সদস্যরা পেছন দিক থেকে হামলা চালিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে একাধিক স্টেপ করে।
 
এ সময় পারভেজ ডাক- চিৎকার করলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা ধাওয়া দিলে দূর্জয় বাহিনীর সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে আহত পারভেজকে উদ্বার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকেই বলেন, এমন কোন রাত নাই যে রাতে কাউকে না আটকায় এরা। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে এরা বেয়াদবি করে, এরা সারারাত বাহিরে থাকে এবং এদের সাথে সব সময় ধারালো অস্ত্র থাকে তাই আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনা। ভয়ংকর এই কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য জেলা আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।