নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২৮ মার্চ ২০২৪

নারায়ণগঞ্জ

অবশেষে মূল আসামী ও প্রক্সিদাতার বিরুদ্ধে আদালতের মামলা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০০:৫৫, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

অবশেষে মূল আসামী ও প্রক্সিদাতার বিরুদ্ধে আদালতের মামলা

নারায়ণগঞ্জে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামীর পক্ষে প্রক্সি দিয়ে সাজাভোগ করার ঘটনায় মুল আসামী ও প্রক্সিদাতার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত আসামী পক্ষের আইনজীবীকে সশরীরে আাদলতে হাজির করান। এসময় আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকেয়া সুলতানা ঘটনার জন্য আদালতে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত তার প্রার্থনা মঞ্জুর করে ভবিষ্যতের জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন।

 


বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালত প্রক্সিদাতা ও মূল আসামির বিরুদ্ধে মামলার আদেশ দেন। এরপর আদালতের নির্দেশে বেঞ্চ সহকারী জহিরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

 


মাদক মামলায় দন্ডিত প্রকৃত আসামির নাম জাকির হোসেন সোহেল গাজী। তিনি বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকার মৃত সামাদ মিয়ার ছেলে। আর তার হয়ে প্রক্সি দিয়ে কারাবরণকারী মো. জুয়েল বন্দরের কদম রসুল এলাকার আলাউদ্দিনর ছেলে।

 


সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী জহিরুল ইসলাম জানান, আদালত আমাকে বাদী হয়ে দন্ডবিধির ২০৫, ৪১৯ ও ১০৯ ধারায় মামলা করার নির্দেশ দেওয়ায় আমি দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।

 


নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, আদালত মূল আসামির হয়ে প্রক্সি দিয়ে জেল খাটতে যাওয়া মো. জুয়েলকে মাদক মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আর মূল আসামিকে মাদক মামলায় সাজা ভোগের জন্য কারাগারে পাঠিয়েছেন। তবে এ দুই আসামির বিরুদ্ধেই আবার নতুন মামলার আদেশ দিয়েছেন। মামলায় তারা দোষী প্রমাণ হলে তাদের সাজা হতে পারে।

 


আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ২০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হওয়া জাকির হোসেন সোহেল গাজীর বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১০ আগস্ট তার অনুপস্থিতিতে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদÐ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। কিন্তু সোহেল নিজের পরিবর্তে তার পরিচিত মো. জুয়েলকে গত ১২ সেপ্টেম্বর তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকেয়া সুলতানার মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করান। এরপর জুয়েলকেই সোহেল হিসেবে সাজা খাটতে কারাগারে পাঠানো হলে বিষয়টি প্রথমে কারা কর্তৃপক্ষর নজরে আসে। কারণ জুয়েল এর আগে ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। কারা কর্তৃপক্ষ জুয়েলকে চিনে ফেলে এবং তার নাম সোহেল গাজী নয় বলে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেন যে তার প্রকৃত নাম মো. জুয়েল। তিনি মাদক মামলায় দণ্ডিত সোহেল গাজীর হয়ে কারাভোগ করতে এসেছেন।

 

বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ কারা কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট আদালতকে জানালে আদালত প্রকৃত আসামি সোহেল গাজীকে গ্রেপ্তারের জন্য ফের পরোয়ানা জারি করেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর বন্দর থানা পুলিশ মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামি সোহেলকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালতে সোপর্দ করে। সেই ঘটনায় বুধবার সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামি সোহেল গাজী ও তার হয়ে প্রক্সি দিয়ে কারাগারে যাওয়া জুয়েলকে আদালত উপস্থিত রাখার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আসামি সোহেল গাজীর আইনজীবী রোকেয়া সুলতানাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
 

সম্পর্কিত বিষয়: