নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪

বন্দরে প্রান্তিক মৎস্য চাষীর সংবাদ সম্মেলন

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০৩:৪৬, ২ অক্টোবর ২০২২

বন্দরে প্রান্তিক মৎস্য চাষীর সংবাদ সম্মেলন

বন্দরের চিহ্নিত ভূমিদস্যু হাবিবুর রহমানসহ ড্রেজার ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী মৎস চাষী আলী আহাম্মদ ও তার পরিবার। শনিবার (১ অক্টোবর) বিকেলে ৫টায় বন্দর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত  হয়।  

সংবাদ সম্মেলনের হুবহুব তুলে ধরা হল : 

আসসালামু আলাইকুম। আমি মো. আলী আহাম্মদ, পিতা মৃতঃ আলী হোসেন। বন্দর কলাবাগ এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা। পেশায় একজন ক্ষুদ্র  মাছের খামারী। দীর্ঘ ৩৬ বছরের বেশি সময় ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাশয়, ডোবা  পুকুর লীজ নিয়ে মাছের খামার এবং রেনুর প্রজনন করে আসছি।

 

মাছের পোনা/রেনু চাষে সফলতার জন্য উপজেলা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে আমাকে পদক প্রদানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়।


প্রায় ৪ বছর আগে বন্দর রেললাইন কলাবাগ এলাকায় আমার খামারে স্থানীয় চিহ্নিত ভূমিদস্যু হাবিবুর ও তার ভাই শফিকুল গং রাতের অন্ধকারে আমার খামারে বিষ দিয়ে অনুমান ৫০ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলে।


এ ঘটনায় জাতীয় এবং স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয় এবং থানায় জিডি করি। এসআই সাখাওয়াত হোসেন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েও কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি। যদিও ততকালীন ইউএনও এবং মৎস্য অফিসার ওই ঘটনায় জোড়ালো ভুমিকার কারণে ভূমিদস্যুরা কয়েকবছর নিশ্চুপ ছিলো।


সম্প্রতি ওই ভূমি খেকো সিন্ডিকেট আমার মাছের খামার ভরাট করার জন্য আবারও মরিয়া হয়ে উঠেছে।রুপালী খেকো হাবিবুর গং এর সাথে এবার যুক্ত হয়েছে উত্তর কলাবাগের নব্য ড্রেজার সন্ত্রাসী উজ্জ্বল ও নুরবাগের রাজু সহ আরও কয়েকজন। 


তারা জোরপূর্বক আমার উক্ত মাছের খামার ভরাট করার জন্য ড্রেজার পাইপ সংযোগ দিলে ৪/৯/২২ ইং তারিখে আমি থানায় জিডি করি। পরে পুলিশ গিয়ে ড্রেজার বন্ধ করে দেয়। মাছের খামার রক্ষার জন্য ১৩/৯/২২ ইং ও ২৫/৯/২২ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) বরাবরে লিখিত আবেদন করি।


কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে ৬৯৫/২২ নং পিটিশন মামলা দায়ের করি। সকল কাগজপত্র এবং পত্রিকার কাটিং যাচাইয়ের মাধ্যমে উক্ত মাছের খামার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন আদালত।
এ সংক্রান্ত একটি সাইনবোর্ড ছিলো।

 

কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করেই সাটানো সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে এবং ড্রেজার সন্ত্রাসীরা রাতের অন্ধকারে জোরপূর্বক আমার খামারে বালু ভরাট করে লাখ লাখ মাছ ও রেনু মেরে ফেলছে। 


বাধা দিতে গেলে আমাকে ও আমার পরিবারের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়।ফলে প্রতিনিয়ত ব্যপক লোকশানের সম্মুখীন হচ্ছি।


প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা, আদালতের আদেশ অমান্য / উপক্ষা করেই বীরদর্পে সরকারি জলাশয় ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন মাছের খামার ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট করে যাচ্ছে। বালু সন্ত্রাসের আগ্রাসনে মারা যাচ্ছে মৎস্য খামারের লাখ-লাখ পোনামাছ।স্বর্বশান্ত হচ্ছে ক্ষুদ্র মৎস্য খামারিরা।প্রতিবাদ করলে নিরীহ খামারিদের ওপর হামলা-মামলার ঘটনা ঘটে।


রেললাইনের পূর্ব দিকে ৩৯ শতাংশ খামারের ওপর ১৪৫ ধারা অনুযায়ী স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন আদালত। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে ২৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) গভীর রাতে ড্রেজার সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক তার মাছের খামারে বালু ভরাট শুরু করে। 


ফলে খামারের অনেক মাছ মরে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দিলে উজ্জ্বল ও রাজু আহামেদ সহ শতাধিক উঠতি বয়সী সন্ত্রাসীরা চড়াও হয় এবং জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ এসে পুনরায় ড্রেজার বন্ধ করে দেয়।

 

এ ঘটনায় স্থানীয় বহুল প্রচারিত দৈনিক ড্যান্ডি বার্তা এবং জাতীয় দৈনিক নয় দিগন্ত পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের কারণে ড্রেজার সন্ত্রাসীরা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমন অবস্থায় আমার ক্ষুদ্র মাছের খামার রক্ষায় আপনাদের সহায়তা কামনা করছি।