নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

২৪ এপ্রিল ২০২৪

বন্দর শাহী জামে মসজিদে ৫২ সদস্যের কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতা, ক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০৬:০৩, ১৪ জুন ২০২১

বন্দর শাহী জামে মসজিদে ৫২ সদস্যের কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতা, ক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন আওতাধীb ২১নং ওয়ার্ডস্থ বন্দর শাহী জামে মসজিদটি শাহী আমলের হওয়ায় অনেক ঐতিহ্য বহন করে আসছে। তাই এই মসজিদটিকে ঐতিহ্যবাহী শাহী জামে মসজিদ বলা হয়ে থাকে। স্বনামধন্য এই মসজিদ কমিটিতে দীর্ঘদিন ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিল জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবুল জাহের।

গত বছরের ১৫ আগষ্ট তিনি মারা যাওয়ার ফলে বন্দর শাহী জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি পদটি শুন্য হয়ে যায়। এরপর থেকেই ওই শুন্য পদ পূরণসহ মসজিদ কমিটিতে নতুন নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় নামে স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয় ওই মসজিদ কমিটির নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিরা। দ্বিধা-বিভক্তিতে পড়ে শাহীমসজিদ কমিটিতে থাকা সাধারন সদস্যরা। অভিভাবক শুন্যতায় ভূগে স্থানীয় লোকজন। বর্তমান সামাজিক ব্যবস্থায় মসজিদ পরিচালনা কমিটি মসজিদের গুরুত্বপূর্ণ অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু সঠিক জ্ঞানের চর্চা না থাকায় এবং নৈতিক অবক্ষয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্দর শাহী জামে মসজিদেও এমন সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে।

 

এদিকে শাহী মসজিদ কমিটি গঠনের নেতৃত্ব দিতে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু আর অপর গ্রুপে নেতৃত্ব দিচ্ছে বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান আরিফ। উভয় গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে কমিটির পদপদবী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ রাজনৈতিক মহলেও দৌড়ঝাপ করতে দেখা গেছে।

 

মহানগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু মসজিদ কমিটির সভাপতি পদ বাগিয়ে নিতে শাহী জামে মসজিদ কমিটির একাংশ সদস্যদের নিয়ে একাধিকবার মিটিং করতে দেখা গেছে। অপরদিকে বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান আরিফ মসজিদ কমিটির সভাপতি পদে কোন কনিষ্ট কিংবা মসজিদ মূখী নয় এমন লোককে কমিটিতে না দেয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে আলাদাভাবে মসজিদ কমিটির আরেকটি অংশ নিয়ে মিটিং করতেও দেখা গেছে। উভয় গ্রুপের মধ্যে নানা আপত্তি-বিপত্তিতে চলে গেল প্রায় ১০টি মাস। এই মসজিদ কমিটি দ্বন্দ নিরসন করতে বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদের দারস্থ হল উভয় গ্রুপ।

দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর ১৩ জুন সকাল ১০টায় বন্দর শাহীমসজিদে উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদ ও বন্দর থানার তদন্ত ওসি মহসিন মিয়াকে আমন্ত্রন জানানো হয়। মসজিদ কমিটির সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত শাহী জামে মসজিদের কমিটি ঘোষনা করা হয়। কমিটি ঘোষনা করেন বন্দর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদ।

এ কমিটিতে সভাপতি পদে রয়েছেন মতিউল্লাহ মিন্টু,সিনিয়র সহসভাপতি পদে রয়েছেন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু,সহসভাপতি জান মোহাম্মদ প্রধাণ,সাধারন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম,যুগ্ম সম্পাদক বদরুজ্জামান,সহ যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ ব্যংকার,ক্যাশিয়ার মোঃ সোহেল,আদায়কারী আলী হোসেন প্রধাণ,নাজিম উদ্দিন, আমির হোসেন, সামসুল হাসান, সদস্য হান্নান সরকার, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান আরিফ, শাহজাহান লিটন, মোঃ সেলিম,বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ,বীরমুক্তিযোদ্ধা জিএম সারোয়ার,আমির হোসেন, আবু বকর ছিদ্দিক, বাবুল কন্ট্রাক্টর, আবুল খায়ের, শাহ জাহান শিকদার, আফতাব উদ্দিন,আলাউদ্দিন, সালাউদ্দিন, মাকসুদ সরকার, শফিকুল ইসলামসহ ৫২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি।

এদিকে কমিটির শীর্ষ পদ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তারা জানিয়েছেন,মসজিদ আল্লাহর ঘর। মসজিদ কমিটিতে যে কাউকে নেতৃত্ব দেয়ার মানসিকতা বোকামীর সামিল। মসজিদ কমিটিতে কোথাও জায়গা হলে খেদমত মনে করা উচিৎ। মসজিদ কমিটি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্মীয় দায়িত্ব। যে কারও হাতে এ দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া ঠিক না। তাই কাউকে মসজিদ কমিটির জন্য বাছাই করার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হওয়া দরকার মসজিদ কমিটির দায়িত্ব নেয়ার মতো যোগ্যতা তার আছে কি না। অথচ আমাদের ঐতিহ্যবাহি শাহী জামে মসজিদের কমিটিতে সিনিয়র সহসভাপতি রাখা হল একজন ছাত্রলীগ নেতাকে। তার নাম হাসনাত রহমান বিন্দু। সে থাকে বন্দর ২২নং ওয়ার্ডের ভূইয়া বাড়ি এলাকায়। ক্ষমতা থাকলেই এখন মসজিদ কমিটিতে থাকা যায় এটাই বর্তমান কমিটির বহিঃপ্রকাশ। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে একজন ধার্মিক নামাজী ব্যাক্তিকে দেয়া উচিৎ ছিল। এমন হটকারী সিদ্ধান্তে আমরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।

আরও পড়ুন :বন্দরে ইয়াবাসহ গ্রেফতার ৩

সম্পর্কিত বিষয়: