নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

১৮ এপ্রিল ২০২৪

অংশীদারি ব্যবসার হিসাব চাইলে

কাউন্সিলর রুহুলের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদা দাবির অভিযোগ 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০২:১৫, ১১ জুলাই ২০২১

কাউন্সিলর রুহুলের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদা দাবির অভিযোগ 

সিদ্ধিরগঞ্জে অংশীদারি ব্যবসার হিসাব চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রুহুল ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ দায়ের করেছেন অপর অংশীদার এমরান হোসেন। শনিবার (১০ জুলাই) সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ অভিযোগ (নং-৭৮/২৭) দায়ের করেন এমরান। 


অভিযোগ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান পিপিএমবার জানান, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। 


অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৮ নং ওয়ার্ডের এনায়েতনগর মসজিদ রোড এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. এমরান হোসেন অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি গত ৫ বছর যাবত ডিস ব্যবসা চালিয়ে আসছে। 


গত আড়াই বছর পূর্বে নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা (৪৬) ও তার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণ (৩৩) সহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ ব্যক্তি ভয়-ভীতি প্রদর্শনকরে নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে প্রতিমাসে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। 
এমরান হোসেন নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনার জন্য এক লাখ টাকা চাঁদা কখনো কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা এবং কখনো তার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণকে দিয়ে আসছিলো। 


অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, করোনাকালীন সময়ে গ্রাহকরা ঠিকমতো ডিশ ভাড়া প্রদান না করায় এমরান হোসেন অর্থ সংকটে থাকায় তাদের চাহিদামতো প্রতি মাসে চাঁদার একলাখ টাকা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। 


এতে কাউন্সিলর ও তার সহযোগী ব্যবসায়ী এমরানের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২ টায় তার কর্মচারী আব্দুর রহিম বাদশা উত্তর এনায়েত নগর এলাকায় সংযোগ মেরামত করতে গেলে কাউন্সিলরের সহযোগী মমিনুল আলম পুষণ আরো ৬-৭ জন অজ্ঞাত নামা ব্যক্তি আব্দুর রহিম বাদশাকে আটক করে এমরানকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। 


একপর্যায়ে কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার সামনেই তার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণ কোমর থেকে দেশীয় ধারালো চাকু বের করে হুমকি দিয়ে বলে যে, এখন থেকে তুই কাউন্সিলরকে (রুহুল আমিন মোল্লাকে) প্রতি মাসে দুইলাখ টাকা চাঁদা দিবি, নতুবা তোর ব্যবসা বন্ধ করে দিব। 


এমনকি এই বিষয় নিয়ে কোন প্রকার বাড়াবাড়ি বা কোথাও অভিযোগ করলে এমরানকে প্রানে মেরে ফেলর হুমকি দিয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানের ফাইবার জয়েন্ট মেশিন (যার মূল্য ১,৪০,০০০/- টাকা) জোরপূর্বক নিয়ে যায়। পাশাপাশি মাসিক ভাড়া আদায় করতে নিষেধ করে চলে যায়। 


এতে ভীতসন্ত্রস্ত এমরান হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১০ জুলাই দুপুরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার অনুলিপি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন। 


এ বিষয়ে কথা হলে নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা বলেন, এ ডিস ব্যবসাটি এর আগে অন্য এক ব্যক্তির ছিলো। এ নিয়ে এলাকায় দলীয় কোন্দলের সৃষ্টি হয়। পরে ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ এলাকার মুরুব্বীরা আমাকে এ সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেয়।

 

সেই মোতাবেক ইমরানকে দায়িত্ব দেয়া হয় ব্যবসাটি পরিচালনার জন্য। এবং একটি চুক্তি করা হয়। যাতে উল্লেখ আছে ইমরান এ ব্যবসার লভ্যাংশ বাবদ ৬০ শতাংশ ও দলীয় কর্মীরা ৪০ শতাংশ বন্টন করে নিবেন। 


চুক্তির আড়াই বছর ধরে ইমরান থোক টাকা দিলেও ব্যবসার হিসেব নিকেশ দিচ্ছেনা। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বসাও হয়েছিল। সম্প্রতি গত ৪ মাস ধরে ওই থোক টাকাটাও ঠিক মতো টাকা দিচ্ছে না। এর আগে সে আমার কাছেই টাকা দিতো, আমি অন্য একজনকে দিয়ে দলীয় কর্মীদের বন্টন করে দিতাম। 


এখন ব্যবসার হিসাব চাইলে এমরান টালবাহনা শুরু করে। আমার বলেছি লস হলে তা সবাই মিলে দিবো। কিন্তু সে তা না করে উল্টো মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্যবসার চুক্তিনামা আমি থানায় এককপি দিয়ে এসেছি। 


এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।