নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিমরাইল মোড়ের ফুটপাত ফের দখল, চাঁদাবাজি শুরু

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০৩:২৬, ৪ ডিসেম্বর ২০২১

শিমরাইল মোড়ের ফুটপাত ফের দখল, চাঁদাবাজি শুরু

 
সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিন পাশে ফের শুরু হয়েছে ফুটপাতে চাঁদাবাজি। ফলে বাইপাস সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আড়াই শতাধিক দোকান থেকে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজি করছে রিপন ওরফে মুরগি রিপন গংরা। আর তাদের শেল্টারদাতা হচ্ছে দুই কাউন্সিলর, থানা পুলিশের অসাধু কর্মকর্তা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ একাধিক নেতা, স্থানীয় মাস্তান এবং মার্কেট মালিক গং। বিনিময়ে তারা ফটুপাতের চাঁদাবাজির বাটোয়ারা পান। যার কারণে সড়ক দখল করে গড়ে উঠা ফুটপাতের অবৈধ দোকান-পাট স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ হয় না। বরং বছরের পর বছর ধরে ইদুর-বিড়াল খেলা চলে উচ্ছেদের নামে। আর ভোগান্তি ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে পথচারীরা। মজার বিষয় হলো চাঁদাবাজরা গ্রেপ্তার বা আটক হলেও মাসোহারা পাওয়া লোকজন তাদের জামিনে অথবা থানা থেকে ছাড়িয়ে আনে। সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে বাইপাস সড়কটিতে যান চলাচলের ব্যবস্থা করলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ চাঁদাবাজদের শেল্টারদাতা প্রভাবশালী হওয়ায় নানাভাবে দেনদরবার করে পুনরায় সড়ক দখলে উৎসাহ পাচেছ অবৈধ দখলদাররা। 


জানা গেছে, শিমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ অবৈধভাবে গড়ে উঠা সকল ফুটপাত দোকান উচ্ছেদ করে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। এসব দোকান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করতো রিপন গংরা। উচ্ছেদের পর দেড় মাস পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ ফুটপাত বসাতে দেননি। সম্প্রতি ওই ফুটপাতের চাঁদাবাজি বহাল রাখতে আবারো মাঠে নামে মুরগী রিপন। তার কারিশমায় ফের দখল হয়ে পড়ে ফুটপাত। নিশ্চুপ হয়ে পড়ে হাইওয়ে পুলিশের ঝান্ডা অভিযান। নিশ্চুপ হয়ে পড়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তরা। 


মুরগী রিপন  ও তার সহযোগীরা আর্থিক ফাঁয়দা প্রতি দোকান থেকে ৫ হাজার টাকা করে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলেছে। আর প্রচার করে বেড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা ও হাইওয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওই টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আবার ফুটপাতে দোকান বসিয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে গাড়ি চলাচলের জন্য নির্মিত বাইপাস সড়ক। 


প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে রিপনের চাঁদাবাজ জামাল, নাসির, শাকিল ও ফয়েজ মেম্বার।  পরিসংখ্যান মতে আড়াইশতাধিক দোকান থেকে দৈনিক ২শ’ টাকা করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। যা মাসে দাঁড়ায় ১৫ লাখ টাকার উপরে। 


নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ফুটপাত দোকানদার জানান, সওজ কর্মকর্তা ও হাইওয়ে পুলিশ ম্যানেজ করার কথা বলে রিপন প্রত্যেক দোকানদার থেকে এককালিন ৫হাজার টাকা করে চাঁদা নিয়েছে। আগে দৈনিক ১০০ টাকা করে নিলেও এখন নিচ্ছে ২০০ টাকা করে। 


এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিপন বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের লোকজনের সাথে পরামর্শ করেই দোকান বসানো হয়েছে। তবে ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে কাকে দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি তা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। 


হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা টিআই (প্রশাসন) মশিউর রহমান বলেন, ফুটপাত বসানো কোন অনুমতি তিনি আমি দেননি। উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশ পেলেই উচ্ছেদ করা হবে।


নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল বলেন, মহাসড়কের পাশে ফুটপাত বসার কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। খুব দ্রুত এসব ফুটপাত উচ্ছেদ করা হবে।

সম্পর্কিত বিষয়: