নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪

১৯ বছরে ২২ নেতার মৃত্যু, তবুও হয়নি সম্মেলন

দুই নেতার ড্রয়িং রুমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০২:২৭, ৪ জুন ২০২২

দুই নেতার ড্রয়িং রুমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগে চলছে হ-য-র-ল-ব অবস্থা। দুই শীর্ষ নেতাকে ঘিরে দুই ভাগে বিভক্ত নেতাকর্মীরা। ওই শীর্ষ নেতা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের রাজনীতি তাদের ড্রয়িং রুমে নিয়ে গেছেন। দুইজনেই দুইজনের বাড়িতে দলীয় কার্যালয় বানিয়ে নিয়েছেন। সেখানেই চলে তাদের স্ব স্ব নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মকান্ড। তবে দলীয় কর্মসূচিতে দুই নেতাকে আবার এক মঞ্চে দেখা যায়। মজার বিষয় হলো-সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের ৩ বছরের কার্যকরী কমিটি পার করেছে ১৯ বছর। ৬৭ সদস্যের কমিটির ২২ জন ইতমধ্যে মারা গেছেন। বহিস্কার করা হয়েছে দুইজনকে। বাকীদের মধ্যে কেউ কেউ নিস্ক্রীয়। আবার কার্যকরী কমিটির মিটিং হচ্ছে না বেশ কয়েক বছর ধরে। ফলে একদিকে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নড়বড়ে অন্যদিকে দীর্ঘ সময়ে তৈরী হয়নি যোগ্য ও নতুন নেতৃত্ব। এ নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চাপা ক্ষোভ বিরাজমান থাকলেও প্রকাশ্যে কেউ কথা বলেন না। তবে তারা কথা না বললেও এর প্রভাব পড়বে আগামী জাতীয় নির্বাচনে। এমনটাই মনে করছেন সাধারণ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

 


দলীয় সূত্রমতে, ২০০৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে মজিবুর রহমান সভাপতি ও হাজী ইয়াছিন মিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ২২ জন সদস্য ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেন ও ২ জন বহিষ্কৃত হন।


মৃত্যুবরণ করা নেতারা হলেন- সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বাবুল মোল্লা, সহ-সভাপতি আফছার উদ্দিন, যুগ্ম-সম্পাদক জহিরুল হক, আলী হোসেন আলা, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোহর আলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক নূরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ইদ্রিস সরদার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আজিজ দেওয়ান, শ্রম সম্পাদক মো. মনির হোসেন, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল করিম সাউদ, কার্যকরী সদস্য মো. আব্দুল আলী, সালেহ আহাম্মাদ, জয়নাল আবেদীন, আব্দুল মোতালেব, ফিরোজ আহাম্মেদ, এম এ বারী, মো. আব্দুল হাকিম, হাছান আলী চান্দু সরদার, সেলিম উল্লাহ, ঈমান আলী সরদার, জয়নাল উদ্দিন ও মজিবুর রহমান জজ। বহিষ্কৃত হয়েছেন সহ-সভাপতি নূর হোসেন, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল বাশার।


দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। এ নিয়ে দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদেকুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ২০১১ সালে দলের (সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ) কার্যনির্বাহী পরিষদের একটি মিটিং হয়েছিল। এরপর কার্যনির্বাহী পরিষদের আর কোনো মিটিং করা হয়নি।

 

তিনি আরও বলেন, দলতো শুধু সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক কেন্দ্রিক। তারা তাদের ইচ্ছেমত দল পরিচালনা করছেন। এরমধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থনৈতিকভাবে ও নিজেদের স্বার্থ আদায়ে সফল।

 

ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের আরেক নেতা বলেন, নেতার কাজ হচ্ছে নেতা তৈরি করা। কিন্তু সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শুধু নিজেদের আয় বৃদ্ধি ও স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন।

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, মাঝখানে (২০১৪ সালে) আমরা একটি মিটিং ডেকে ৬ জনকে অন্তর্ভুক্ত করেছি। তার মধ্যে নূর হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কাউন্সিল করতে আমার ডর, ভয় নাই। ওপর থেকে কাউন্সিল দেয় না কেন বুঝে আসছে না। আমি চাই কাউন্সিল হোক। আমি থাকলে থাকলাম, না থাকলে নাই।
 

সম্পর্কিত বিষয়: