নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪

রনিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঢাকায় ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০২:৪৭, ২১ জুলাই ২০২২

রনিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঢাকায় ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন 

বিএনপির নির্যাতিত নেতা কর্মীদের জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি। 


ফতুল্লা থানা সৈনিক লীগের প্রয়াত সভাপতি মোখলেসুর রহমানের পরিবারের কাছে গত ৭ বছর ধরে এ উপহার পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে রনির বিরুদ্ধে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন রনি।

 

তবে যুবদলের এ নেতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গতকাল ঢাকা রিপোর্টারর্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা ছাত্রদল। 


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নাজমুল হাসান বাবু। তিনি বলেন, গত সাত বছর ধরে বিএনপির নির্যাতিত নেতা কর্মীদের মাঝে এ উপহার সামগ্রী বিতরণ না করে আওয়ামীলীগ ঘরনার পরিবারের মাঝে তা বিতরন করে আসছেন মশিউর রহমান রনি। এঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দলীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা । 


এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি সাগর সিদ্দিকী, সাজ্জাদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, মোরশেদ আলম, সাজ্জাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মেহদী, ফতুল্লা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক লেলিন আহমেদসহ অন্যান্য ছাত্রদল নেতারা। 


লিখিত বক্তব্যে নাজমুল হাসান বাবু অভিযোগ করে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্যাতিত নেতাকর্মীদের প্রতিবছর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া বছরের অন্যান্য সময়েও তিনি আর্থিকভাবে অসহায় নেতাকর্মীদের পরিবারকে সহায়তা করে থাকেন। 


কিন্ত তারেক রহমানের দেয়া উপহার সামগ্রী দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের না দিয়ে নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিব ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান রনি আওয়ামীলীগ পরিবারের মাঝে বিতরণ করে আসছেন। 


মশিউর রহমান রনি ফতুল্লা থানা সৈনিকলীগের সভাপতি প্রয়াত মোখলেসুর রহমানের পরিবারের কাছে গত ৭ বছর ধরে তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী বিতরণ করছেন। বিএনপির নির্যাতিত নেতা কর্মীরা এটা মেনে নিতে পারে না। 


লিখিত বক্তব্যে বলা, সৈনিক লীগ নেতা মোখলেসুর রহমান ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ঝুট সন্ত্রাসী ছিলেন। মাদক ও ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের অভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে মোখলেসুর রহমান খুন হয়। 


প্রয়াত সৈনিক লীগ নেতা মোখলেসুর রহমান হত্যা মামলার এজহারে মোখলেসুর রহমানের স্ত্রী ও মশিউর রহমান রনির বড় বোন মাহমুদা আক্তার বাদী হয়ে তার স¦ামীকে বৃহত্তর এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ড এর বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। অথচ রনি দলের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী আওয়ামী পরিবারের মাঝে বিতরণ করেন। 


ছাত্রদল নেতারা জানান, মশিউর রহমান রনি বিভিন্ন সময় তার বক্তব্যে তার বোন জামাই মোখলেসুর রহমানকে তার কারণে গুম ও হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও তারেক রহমানের কাছ থেকে সহানুভূতি আদায়ের মাধ্যমে তার কাঙ্খিত অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছেন। 


আমরা এবিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। দলের নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমরা আশাবাদী। 


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, সৈনিক লীগ সভাপতি মোখলেস হত্যা মামলায় ২নং স্বাক্ষী হিসেবে মশিউর রহমান রনির মামা ফতুল্লা থানার এনায়েতনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান প্রধান, ৩নং স্বাক্ষী রনির বাবা মোস্তফা কামাল ও ৮নং স্বাক্ষী রনির বড় ভাই রুবেল স্বাক্ষ্য প্রদান করেছেন। 


এছাড়াও এ হত্যার প্রতিবাদে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল সহ ফতুল্লা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী জানান। বিভিন্ন গনমাধ্যমে এসব সংবাদ ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। 


নারায়নণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফেল প্রধান, মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি, তোলারাম কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রিয়াদ প্রধান ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই এবং একই পরিবারের সদস্য। 


তারা একই বাড়িতে বসবাস করে। আত্মীয়তার কারনে মামা ও মামাতো ভাইদের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজপথের বিএনপির সক্রিয় নেতা কর্মীদের দমন পীড়নের মাধ্যমে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান তৈরী করে আসছে। 


বিভিন্ন সময়ে রনির অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণে মামাতো ভাইদের সহযোগীতায় নিজ দলীয় নেতা কর্মীদের উপর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করিয়েছেন। 


কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতা কর্মীদের সাথে সু-সম্পর্ক থাকার কথা বলে রনি পদ-পদবীর লালসা দেখিয়ে বিগত দিনে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন তারা।