নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

২৪ এপ্রিল ২০২৪

৩ ঘন্টায় তলিয়ে গেছে ডিএনডি এলাকা, শহরে হাঁটু পানি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০৮:৪১, ২ জুন ২০২১

৩ ঘন্টায় তলিয়ে গেছে ডিএনডি এলাকা, শহরে হাঁটু পানি

টানা তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর শতাধিক এলাকা। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে হাঁটু পানি জমেছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকাসহ শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার অলিগলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।


ডিএনডি এলাকার অধিকাংশ বসতঘর এবং দোকানপাট পানিতে ডুবে গেছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে চলে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় স্থবির হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের তেমন কোনো ব্যবস্থা দেখা যায় নাই। মঙ্গলবার (১ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ নগরীসহ বিভিন্ন এলাকায় জলমগ্ন অবস্থা দেখা গেছে। 


সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার (১ জুন) সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত টানা মুষলধারে বৃষ্টির কারণে বঙ্গবন্ধু সড়কসহ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। শহরের আশপাশের এলাকাসহ অলিগলিতে হাঁটু সমান পানি জমে রয়েছে। 


অনেক এলাকায় কোমর পানি। মহল্লার রাস্তাসহ অলিগলিতে মানুষ পানি বেয়ে চলাচল করছে। অনেকে ঘুম থেকে উঠে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় রাস্তায় বের হয়ে দেখেন হাঁটু পানি।


চাষাড়ার বাসিন্দা ইফতেখার বলেন, সকাল ঘুম থেকে উঠে দোকান থেকে আটা আর তেল আনতে গিয়ে দেখি রাস্তায় হাঁটু পানি। পরে বাসায় জুতা রেখে পানি পেরিয়ে দোকান গিয়েছি। ড্রেন নিষ্কাশন না করার ফলে বৃষ্টি হলেই রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যায়।


ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন বলেন, পানির কথা বলে লাভ কী ? একটু বৃষ্টি হলেই ইসদাইর, গাবতলীসহ আশপাশের এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মত না। এলাকার মানুষ পানির নিচে বসবাস করছে। রাতের টানা বৃষ্টিতে যেন বন্যা দেখা দিয়েছে। মানুষ পানি পেরিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছে। আমরা যারা ডিএনডি এলাকার বাসিন্দা তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।


মিস্ত্রিবাগের নিবাসী এক গৃহীনি জানায়, মাত্র তো ভোগান্তির শুরু। পুরা বর্ষাকালে আরো কতবার ভিজমু আর শুকামু। এর কোন ঠিক নাই। প্রতি বছর আমার ঘরে বৃষ্টির পানি জমে। সারাদিনে মনে করেন কমবে আস্তে আস্তে। আগামীকাল সকাল পর্যন্ত থাকবে না। আর যদি আবার বৃষ্টি হয় তাহলে তো কথাই নাই। পানি আরো বাড়বে ঘরের ভিতর। রাস্তার পানি কমলে ঘরের পানি কমবে। 


এদিকে গাবতলী এলাকার খানকা শরীফের পিছনের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মুষলধারে বৃষ্টির কারনে সেখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা সকালে ঘুম থেকে উঠেই গৃহবন্দি। হঠাৎ সকালে এমন অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই কর্মস্থলে যেতে পারছে না। যানবাহনের চলাচল একদম কম এবং জলাবদ্ধতার কারনে স্বাভাবিক চলাচল হচ্ছে না। 


ওই এলাকার স্থানীয় বাড়িওয়ালা উল্লাস এবং তার স্ত্রী গৃহিনী রাবেয়া জামান জানায়, প্রতি বছর বর্ষাকালে আমাদের এলাকার এ অবস্থা হয়। আজ সকালে অফিসের কাজে ঢাকা যাওয়ার কথা আমি ঘর থেকে বের হতেই পারিনি। আগামীকাল এ পানি সরবে কিনা এর নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থার কোন উন্নতি নেই কর্তৃপক্ষ কখনোই এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে না।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএনডি এলাকার মাহমুদপুর, ভুইগড়, দেলপাড়া, আদর্শনগর, রসুলপুর, নয়ামাটি, নুরবাগ, নন্দলালপুর, পিলকুনি, কুতুবআইল, ইসদাইর, গাবতলী, লালপুর, সস্তাপুর, কলেজ রোড, দেওভোগ, পাইকপাড়া, বাবুরাইল, হাজীগঞ্জ, পাঠানতলী, গোদনাইল, জালকুড়ি, কদমতলি, মিজমিজি ও হিরাঝিল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 


এছাড়া ফতুল্লার মাসদাইর, মুসলিমনগর, হরিহরপাড়া, ধর্মগঞ্জ, কাশিপুরসহ প্রায় শতাধিক এলাকা পানির নিচে রয়েছে।
 

সম্পর্কিত বিষয়: