নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

২৪ এপ্রিল ২০২৪

শিল্প কারখানা চালু, কর্মজীবীদের উপচে পড়া ভীড়

মো, জসিম উদ্দিন

প্রকাশিত:০৫:০৫, ৩ আগস্ট ২০২১

শিল্প কারখানা চালু, কর্মজীবীদের উপচে পড়া ভীড়

রপ্তানিমূখী শিল্প কারখানা খুলে দেওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছে লাখ লাখ শ্রমিক। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কেউ ট্রাক, কেউ পিকআপ, কেউ বা ইঞ্জিনচালিত রিকশায় তাদের গন্তব্যে এসেছেন।

 

অনেকেই আবার যানবাহন না পেয়ে মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে করোনা ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে চাকুরি বছাচাতে হাজির হয়েছেন। তবে চাকুরি বাচানো তাদের প্রধান কাজ বলে তারা মনে করেন। 


চুয়াডাঙ্গা হতে আসা ফকির লিমিটেড এর শ্রমিক হাশেম সিকদার জানান, শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা থেকে রওনা দিয়েছি। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে আসছি রবিবার সকালে। এসময় তিনি বলেন কি করবো কিছু পথ পায়ে হেটে কিছু পথ ভ্যানে চড়ে আবার পিকআপে পনের বিশজনের সাথে গাদাগাদি করে আসতে হয়েছে।


সস্তাপুরের এ্যাবলুম লিমিটেডের শ্রমিক মনিকার সাথে কথা হলে তিনি জানান,  কিভাবে নারায়ণগঞ্জে আসছি এটা আল্লাহ ছাড়া কেহ বলতে পারবে না। যদি জানতাম হঠাৎ করে গার্মেন্টস খোলা হবে তাহলে আর যেতাম না। মনে করেছিলাম ৫ তারিখে গার্মেন্টস খুলবে এই ভেবে একচু নিশ্চিন্তে ছিলাম কিন্তু হঠাৎ শুনি ১ তারিখ রবিবার কাজে যোগদান করতে হবে।

 

কি আর করবো কোন মতে কাপড় চোপর একটা ব্যাগে নিয়ে শনিবার রাত আটটায় ত্রিশজন মিলে একটা ট্রাক ভাড়া নিয়ে ভোর বেলায় নারায়ণগঞ্জ পঞ্চবটি এসে পৌঁছালাম। 


তবে রাতে আসার পথে খাওয়া দাওয়ার অনেক কষ্ট হয়েছে। একটা খাবার হোটেল খোলা ছিল না। এমনকি পানি খাওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় আসার পথে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। মনিকার মতো হাজারো শ্রমিক কষ্টকে উপেক্ষা করে কাজে যোগদান করেছেন। 


সরজমিনে গিয়ে দেখাযায় সকাল আটটায় হাজারো শ্রমিক চাকুরি টিকিয়ে রাখার জন্য করোনার ঝুঁকি নিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। এভাবেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি শ্রমিক চাকুরি বাঁচাতে কাজে এসেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে কাঠেরপুল এলাকার লিবার্টি লিমিটেডের শ্রমিক আশরাফ বলেন, আগে জানলে গ্রামের বাড়ি যেতাম না।

 

এখানেই ঈদ করতাম। কিন্তু মনে করলাম যাক ছুটি তো বেশ কয়েকদিন দিছে তাই বাবা-মায়ের সাথেই ঈদ উদযাপন করে আসি। কিন্তুু হঠাৎ করে সরকারের নির্দেশে গার্মেন্টস খুলে দেওয়ায় আর থাকতে পারলাম না। 


যদি না আসি তাহলে যদি চাকুরি হারাতে হয় সেই ভয়ে ভয়কে জয় করে অনেক কষ্ট করে সকালে নারায়ণগঞ্জে এসেছি। বাড়িতে এসে খাওয়ার ও সময় পাই নাই। না খেয়েই কাজে আসতে হয়েছে ভয় ছিল একচু দেরি হলে যদি হাজিরা কাটে।


এবিষয়ে বিকেএমই ব্যবসায়ী সংগঠনের সহ-সভাপতি হাতেম বলেন, শ্রমিকদের আগেই বলা হয়েছিল কেউ গ্রামের বাড়ি যাবেন না।

 

তারপরও যারা চলে গেছেন তাদের কাজে যোগদানের জন্য আইডি কার্ড দেখে তাদের জন্য বিশেষ বাস চালুর ব্যবস্থা করা হয়। তবে ইতিমধ্যেই গ্রামমূখী শ্রমিকরা যাতে কাজে আসতে পারে সেজন্য লঞ্চ ও বাস চালু করা হয়েছে।