ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনালের পূর্ব দিক ঘেষে এক সাড়িতে দাড়িয়ে আছে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চ। অধিকাংশ লঞ্চগুলো প্রলেপ যুক্ত ও চাকচিক্য। দেখে বুঝার উপায় নেই এগুলো মান্ধাতার আমলে সৃষ্টি।
তবে লঞ্চ গুলোর উপরিভাগে ফিটফাট থাকলেও ভিতর দিকে মেয়াদ উওীর্ণ ও জরাজীর্ণ। যা নিম্ন মানের লোহার প্লেট দিয়ে তৈরি। জরাজীর্ণ এই নৌ-যান গুলো অবস্থা একেবারেই লাজুক। তাই এক একটি লঞ্চের ধারন ক্ষমতা অর্ধশতাধিক যাত্রীর বেশী নয়।
তবে রং সজ্জিত ফিটনেস বিহীন এই মিনি লঞ্চ গুলোতে একশতাধিক যাত্রী ও বহন করা হয়। ফলে অধিকাংশ সময়ে দূর্ঘটনায় কবলিত হয়। যার ফলস্বরুপ গত ৪ এপ্রিল শীতালক্ষ্যা নদীর তীরে চর সৈয়দপুর কয়লাঘাটের সামনে এসকেএল-৩ এর ধাক্কায় এমএল সাবিত আল হাসান ডুবে ৩৫ জন যাত্রীর প্রাণহানি ও ২ জন নিখোঁজ হওয়া ঘটনা ঘটেছে।
নারায়ণগঞ্জ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার দেয়া তথ্য মতে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ নদী পথে প্রতিদিন ২৩টি লঞ্চ যাতায়াত করে। চাঁদপুর রোডে ১৫ টি, সুরেশ্বর ও রামচন্দ্র নদী পথে ৪ টি, এছাড়াও মতলব নদী পথে ১৩টি নৌযান যাতায়াত করে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে যেসকল যাত্রীবাহী লঞ্চ গুলো বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে এদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ রুটে চলাচলরত লঞ্চ গুলোর অবস্থা একে বারেই জরাজীর্ণ ফিটনেস বিহীন ও মেয়াদ উওীর্ণ। এসব লঞ্চের চালকগুলোর নেই কোন কাজের দক্ষতা। সুকানী, টিকেট মাস্টার দিয়ে ও এই লঞ্চ গুলো ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে দেখাযায়।
এ বিষয় কথা বললে যাত্রীরা করেন বিস্তর অভিযোগ। তাদেও অভিযোগ, প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এই নৌরুটের লঞ্চ সার্ভিস ব্যবহার করে। তবে লঞ্চে নূন্যতম সুবিধা নেই। নিচতলার থেকে উপর তলায় ভাড়া বেশি। কিন্তু বসার সিট একই রকম।
সাদেকুর রাহমান নামের আরেক যাত্রী বলেন, সবকিছুর উন্নয়ন হয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ রুটের লঞ্চের উন্নয়ন হয় না। মাঝ নদীতে একটার পর একটা জাহাজ তো আছেই। পাশ কেটে যেতে গিয়ে দূর্ঘটনার আশংকা থাকে প্রায় সময়ই।
এ বিষয়ে বাংলাদের অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বলেন, নারায়ণগঞ্জ মুন্সিগঞ্জ রুটে লঞ্চ নির্মাণে কারো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এছাড়াও মুন্সিগঞ্জ সড়ক পথ অতি নিকটে হওয়ায় মানুষ নৌপথের বিকল্প হিসেবে সড়ক পথে যাতায়াত করে।
তাছাড়া লঞ্চ নির্মান অনেক ব্যয় বহুল। তাই মানুষ বাধ্য হয়েই এই লঞ্চ গুলো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করে। তবে পরিবর্তন করতে হলে পুরো অবকাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। এতে অনেক ব্যয় হবে। তবে এক্ষেত্রে সরকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করলে নতুনত্বের ছোঁয়ায় অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারবো।