
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অন্তত ৪০টি গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার প্রকোপে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
বহু টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন কারখানার বর্জ্যযুক্ত পানি এলাকার ড্রেনে মিশে রোগবালাই ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা ঠেলে চলতে হচ্ছে চালকদের। অনেক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজে যেতে পারেনি। শ্রমজীবী মানুষরা যেতে পারেননি কর্মস্থল ও কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। উপজেলার নিচু এলাকায় ভবনগুলোর নিচতলা, দোকান ও অফিসে ঢুকে পড়েছে বৃষ্টির পানি। ড্রেন উপচে পড়া আবর্জনা পানির সঙ্গে মিশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারদিকে, বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
নাগরিকদের অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা বা বৃষ্টি হলেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটে। কিন্তু, সমস্যার স্থায়ী সমাধানে নেই কার্যকর উদ্যোগ। অপরিকল্পিত নগরায়ন, দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও দখল হওয়া খালগুলোই বারবার জলাবদ্ধতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, অপরিকল্পিত সেচ প্রকল্প, খাল ভরাট, এবং আবাসন কোম্পানির বালিভরাটের কারণে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভুলতা, মুড়াপাড়া, গোলাকান্দাইল, আমলাব, ও তারাবোসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বহু গ্রামে বাড়ির ভেতরেই হাটু সমান পানি। রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বসতঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই গবাদিপশু অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন, কেউ কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
টেলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ জানান, ময়লা পানিতে হাঁটার কারণে শিশুদের পায়ে চুলকানি দেখা দিয়েছে। বলইখা এলাকার রমিজ উদ্দিন বলেন, শিল্প কারখানার গরম বর্জ্য মিশে পানি কালো হয়ে গেছে। এতে রোগ ছড়াচ্ছে, মাছ মরে যাচ্ছে।
ইসলামবাগ এলাকার শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘বাড়িতে হাঁটু পানি, স্কুলে যাওয়া বন্ধ। রান্নাও করা যাচ্ছে না।স্থানীয়রা বলছেন, নিচু জায়গায় বাড়ি তৈরি হওয়ায় এই সমস্যা বাড়ছে। আমলাব এলাকার রফিক মিয়া বলেন, ১৫ বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। সুইচগেট থাকলেও সময়মতো চালু না করায় জলাবদ্ধতা বাড়ে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে। আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যেই পানি নেমে যাবে।