নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস লিমিটেডের সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ আগুনের ঘটনার প্রায় দুই মাস পর তল্লাশি চালিয়ে দ্বিতীয় দফায় আগুনে পুড়ে যাওয়া দুটি দেহাবশেষ (হাড় ও কঙ্কাল) উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিআইডি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়। এর দুদিন আগে মঙ্গলবার কারখানাটিতে তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু হাড়, খুলি ও চুলের সন্ধান মেলে।
সিআইডি নারায়ণগঞ্জ অফিসের এএসপি মো. হারুন অর রশিদ জানান, সেজান জুস কারখানায় আগুন লাগার পর থেকেই শ্রমিক মহিউদ্দিন, সাজ্জাদ ও লাবণি নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ পরিবারের। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিসকে চিঠি দেয় সিআইডি।
এরপর মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় ভবনটিতে তল্লাশি চালায় ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম। ভবনের চতুর্থ তলা থেকে তিনটি হাড়ের অংশ উদ্ধার করা হয়।
পরে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় তল্লাশি চালিয়ে মাথার খুলিসহ কঙ্কাল ও হাঁটুর নিচের অংশের হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা ওই রুমে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এএসপি মো. হারুন অর রশিদ বলেন, উদ্ধার করা দেহাবশেষ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ রিপোর্টের পরই বিস্তারিত বলা যাবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই বিকেলে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে তাৎক্ষণিকভাবে তিনজন মারা যান। পরদিন আগুন নিভিয়ে ফেলার পর ৪৮ জনের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
ঘটনার পর ৪ আগস্ট ডিএনএ পরীক্ষা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে প্রথমে ২৬ জন ও পরবর্তীতে ২১ জনের পোড়া মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে কারখানার মালিক আবুল হাসেমসহ আটজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ১৫ জুলাই মামলার তদন্তভার সিআইডির (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।