নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

০৯ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৯:৩৭, ৫ জুন ২০২৩

নারায়ণগঞ্জের তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন

জ্যৈষ্ঠের টানা কয়েকদিনের তীব্র গরম ও দিনেরাতে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের জনজীবন। ঘরে-বাইরে সবখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে এখানকার বাসিন্দাদের।

 

সবাই এখন বৃষ্টির জন্য মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থণা করতে শুরু করেছেন। সোমবার (৫ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের তাপমাত্রা ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। 


এদিকে, গরম থেকে বাঁচতে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে যাদের বাইরে যেতে হতে হচ্ছে তাদের অবস্থা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে গরমে। সবচেয়ে কঠিন অবস্থা পার করছেন দিন মজুর, রিকশাচালক ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা।

 

এছাড়া, রাতে লোডশেডিং হওয়ায় মানুষ ঠিকমতো ঘুমাতেও পারছেন না। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় নারায়ণগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।


স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গড়ে ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। মাত্রাতিরিক্ত গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বিদ্যুৎ না থাকায় বাসা বাড়িতে দৈনন্দিন কার্য সম্পাদন করতে বেগ পেতে হচ্ছে। আর  লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়া খুবই প্রয়োজন।


শহরের জাহানারা নামে এক নারী বলেন, বাড়ির প্রধান ব্যক্তি সারাদিন কাজ করে ফিরে খেতে বসেছে। এখন বিদ্যুৎ নেই। তাই হাত পাখা দিয়েই তাকে বাতাস করছি। কখন বিদ্যুৎ আসবে তার ঠিক ঠিকানাও নেই। সেই সঙ্গে যে তাপ পড়ছে তাতে টেকা দুষ্কর হয়ে গেছে।


শহরের বাসিন্দা মৌসুমী আক্তার বলছেন, প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকে না। পোলাপান পড়াশুনা করতে পারে না, গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়, গরমে ঘরে কেউ ঘুমাতে পারে না।


বন্দরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, লোডশেডিং অনেক বেড়ে গেছে। আধা ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে দুই ঘণ্টা থাকে না। নামাজের সময়টুকুতেও বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। রাতে বিদ্যুৎ গেলে সকালে আসে। এতে করে ঘুমটাও ঠিকমতো হচ্ছে না।


তামিম হাসান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সন্ধ্যার পর পরই কারেন্ট চলে যায়। এরপর রাত ৯টা বা ১০টার দিকে আসে। ঘণ্টাখানেক থাকার পর আবারও চলে যায়। লেখাপড়া করতেই পারছি না। তাছাড়া গরমে খুব কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।


জামিল হোসেন নামে অপর একজন বলেন, ঘরে শিশু সন্তান রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সারাক্ষণ পাখা ব্যবহার করতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় পাখা ব্যবহার করাও খুব কঠিন। বিল না দিলে মাইকিং করে অথচ বিদ্যুৎ দিচ্ছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।


এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ পূর্ব  (এনওসিএস) নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন ফকিরকে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি।


এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ( সদর দপ্তর ) প্রকৌশলী মো. মাশফিকুল হাসান বলেন, নারায়ণগঞ্জে খুব গরম পড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দফায় দফায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

 

নারায়ণগঞ্জে দৈনিক যে বিদ্যুতের চাহিদা তার চেয়ে ৯০  মেগাওয়াট ঘাটতি রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৩৫০- ৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। আমাদের গ্ৰাহক রয়েছে  ৩ লক্ষ ৭২ হাজার। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু না হওয়ায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। তবে আগামী ২৫ জুন পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হওয়ার কথা রয়েছে।কেন্দ্রটি চালু হলে তখন লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেকটা কমে আসবে।


রাত ১২টার পরে লোডশেডিং করার বিষয়ে তিনি আরও জানান, পাওয়ার গ্রিড থেকে যখন যতটুকু আমাদের ঘাটতির কথা বলা হয়, তখন ততটুকু বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়। সেটা রাত ১২টা কিংবা ১টা হোক না কেন। মূলক দিন রাতের নির্দিষ্ট কোনো সময় বলে কথা নয় ঘাটতি বলা হলেই লোডশেডিং করতে হচ্ছে।  
 

সম্পর্কিত বিষয়: