
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ডাঃ সেলিম হায়াৎ আইভী শুক্রবার (৯ মে) ভোরে গ্রেপ্তারের পর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পূর্বে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কেন আমাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা আমি ঠিক জানিনা। যেহেতু এখানে প্রশাসন এসেছে, তারা বলেছে আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে, যদিও তারা ওয়ারেন্টের ইস্যুটা আমাকে দেখাতে পারে নাই।
কিন্তু আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমি তাদের সাথে যাচ্ছি। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি তারা রাতে আমার এখানে এসেছে কিন্তু আমি রাতে যেতে চাই নাই। তার জন্য আবার আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি আপনাদেরকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। আপনারা দেখেছেন আমার মহল্লা লোকজন তারা সারারাত এখানে অবস্থান নিয়েছে। আমি আমার এলাকাবাসী ও মহল্লাবাসীকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
(আইভীর বক্তব্যের ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
আমাকে ভালোবাসার কারণে আপনারা কোন বিরূপ আচরণ করেন নাই। আমি আপনাদেরই সন্তান আপনাদেরই মেয়ে আপনারা আমার প্রতি যে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এবং সম্মান দেখালেন আমি আজীবন আপনাদের এই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা সম্মান মনে রাখব।
তিনি বলেন, আমার এলাকাবাসী জানেন আমি আলী আহমদ চুনেকার সন্তান। আমার বাবা দলমত এর উর্ধ্বে সামনে থেকে রাজনীতি করেছে। আমার যদি অপরাধ হয়ে থাকে 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ' স্লোগান বলার কারণে তাহলে আমি সেই অপরাধে অপরাধী হতে চাই। এর জন্য যদি আমার বিচার হয় তাহলে হবে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ শহরকে ২১ বছর যাবৎ আমি আপনাদেরকে সেবা দিয়েছি।
কেউ কোনদিন বলতে পারবে না যে আমি কোন প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে অন্য কোন দলের প্রতি আঘাত করেছি। অথবা আমি কারো সাথে কোন ধরনের বৈষম্যহীনমূলক আচরণ করেছি। জনমতের উর্ধ্বে উঠে নিজের দলে থেকেও আমি মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছি। বিরোধ ও মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও এই শহরের এমন কোন জায়গা নাই যেখানে আমি প্রতিবাদ করি নাই।
ত্বকী হত্যা সহ সকল হত্যার জন্য যখন নারায়ণগঞ্জবাসী চুপ ছিল একজনও কথা বলে নাই আইভী আওয়াজ তুলেছে এই শহরের মানুষকে কথা বলা শিখিয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শিখিয়েছে। সেই আইভীকে কিসের কারণে, কিসের জুলুমের জন্য, আর কি কারনে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে আমি ঠিক জানিনা।
কিন্তু আমাকে যেহেতু গ্রেপ্তার করা হয়েছে আমি নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে একটাই অনুরোধ করবো আপনারা যেভাবে আমারও আমার পরিবারের পাশে ছিলেন, আমার পাশে থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন এক মাস হয়নি আমার অন্তত আদরের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী রেজা রিপনকে আমরা হারিয়েছি। আর সেই ভাইয়ের শোক এখনো ভুলতে পারি নাই। তিনটা ছোট ছোট নাবালক বাচ্চা তাদের মাঝখান থেকে আমাকে এভাবে এরেস্ট করা হলো যেখানে আমার বড় ভাই নাই বোন নাই আমি সবার বড়।
তিনটা ছোট ছোট বাচ্চা এবং একমাসও হয়নি আমার ভাইটা মারা গেছে। আমি কি কোন চাঁদাবাজি করেছি নারায়ণগঞ্জ শহরে আমার কি এমন কোন রেকর্ড আছে যে আমি কোনদিন কোন বিরোধী দলকে আঘাত করেছি। তাহলে কিসের জন্য কিসের কারণে কোন ষড়যন্ত্রের জন্য এবং কার সাথে আমাকে এরেস্ট করা হলো।
আমিও প্রশাসনের কাছে জানতে চাই। যারা সরকারে রয়েছেন তারা সামনের কথা বলেছেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনারা আন্দোলন করেছেন, সরকার হঠিয়ে নতুন সরকার এসেছেন তাহলে কেন এই বৈষম্য?।
তাহলে ওনেষ্ট রাজনীতি আর সততার কি মূল্যায়ন। আমি তো বাড়িতেই ছিলাম আমিতো পালাই নাই। তাহলে আমাকে এভাবে এরেস্ট করতে হলো কেন? সেই জবাব জনগণের কাছে চাই, ইনশাল্লাহ সেই জবাব জনগণই দিবে।