নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা না পেয়ে জয়ন্ত চন্দ্র দাস (১০) নামে এক স্কুল ছাত্রকে অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় একজন আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিনজন পলাতক রয়েছে।
ভিকটিম শিশু জয়ন্ত চন্দ্র দাস রূপগঞ্জের বানিয়াদি এলাকার চৈতন্য চন্দ্র দাসের ছেলে। সে স্থানীয় শিশু মেলা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রূপগঞ্জের মঙ্গলকালী এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শাহীন (৩৫), বলাইনগর এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে আলমগীর (২৭), বনিয়াদি এলাকার রাজকুমারের ছেলে অনিক চন্দ্র দাস (২৭) ও একই এলাকার শন্তোষ চন্দ্র দাসের ছেলে আশিক চন্দ্র দাস (৩০)। এদের মধ্যে অনিক চন্দ্র দাস রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালের ৫ জুন ওই স্কুল ছাত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপনা পেয়ে হত্যার ঘটনায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ভিকটিমের পরিবার আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
রায়ের ঘোষণা শুনে আদালতে কাঁদতে কাঁদতে জয়ন্ত চন্দ্র দাসের মা জয়ন্তী রাণী বলেন, আসামীরা এখনো আমাদের হুমকি দিচ্ছে। একজন আসামি গ্রেফতার আছে বাকি তিনজন আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে ৪ জনের ফাঁসি কার্যকর করার দাবী জানাই।
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে স্কুল ছাত্র জয়ন্ত এর বাবা চৈতন্য বলেন ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন না পেয়ে আমার ছেলেকে নৃসংশভাবে হত্যা করেছে। আমরা দ্রুত রায় কার্যকর চাই।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রহিম বলেন, ২০১৮ সালের ৬ জুন মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা না পেয়ে জয়ন্ত চন্দ্র দাস (১০) নামে এক স্কুল ছাত্রকে শ্বাসরোধে হত্যা করে অপহরণকারীরা। অপহরণের একদিন পর উপজেলার বানিয়াদি এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে এই ঘটনায় বাবা চৈতন্য বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেইসঙ্গে মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেছেন।