
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার পূর্ব শিয়াচর এলাকার রাদিয়া সুলতানা ইমা চলতি বছর ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে অনার্স পাশ করেন।
কিন্তু পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার আগেই তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। স্বামী দশ বছরের এক সন্তান সহ অন্ত:সত্ত্বা ইমাকে ফেলে চলে যান পরকীয়ার টানে। অভাবের সংসারে গত ২০ দিন পূর্বে ইমার ঘরে জন্ম নেয় আরেক সন্তান।
একদিকে সন্তানদের ভরণপোষণের চিন্তা, অন্যদিকে নিজের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন, সবকছুই শেষ হতে বসেছিল। ঠিক সে সময় স্বামী পরিত্যক্ত এই অদম্য নারীর পাশে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাফর সাদিক চৌধুরী। মাস্টার্সে ভর্তিসহ নগদ অর্থ সহায়তা করে ইমার স্বপ্ন পূরণে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
রবিবার (২৮ জুন) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ইমা ও তার অভিবাবকদের ডেকে নিয়ে নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দেন।
সরকারি অনুদান পেয়ে উচ্ছ্বসিত ইমা। বলেন, সাংসারিক নানা অনটনের পরেও আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। আমার দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে থাকাবস্থায় আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে যায়। এরমধ্যে অনার্স পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়।
একদিকে মাস্টার্সে ভর্তির ইচ্ছা, অন্যদিকে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম- সব মিলিয়ে আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম।
একটা সময় মনে হয়েছিল আমার পড়ালেখা এখানেই থেমে যাবে। আমার স্বপ্ন যখন ধূসর হয়ে আসছিল, ঠিক সে সময় ইউএনও স্যার আমার পাশে দাঁড়ান। আমার ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছেন। একই সাথে আমার উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমি ও আমার পরিবার তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
ইউএনও জাফর সাদিক চৌধুরী জানান, ইমার দৃঢ়চেতা মনোবল সমাজের অন্য নারীদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। দুই সন্তানকে নিয়ে তার লড়াই ও উচ্চশিক্ষার যে প্রবল ইচ্ছে- সেটা সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।