নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

২৪ এপ্রিল ২০২৪

শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জে বৃষ্টি হলেই দ্বিগুন ভাড়া

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২৩:২৭, ২৫ অক্টোবর ২০২২

শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জে বৃষ্টি হলেই দ্বিগুন ভাড়া

নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্প নগরীর ২নং গেইট থেকে কাশীপুর অটো রিক্সার ভাড়া ১০ টাকা। কিন্তু সোমবার (২৪ অক্টোবর)  সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টির কারণে সেই ১০ টাকার ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ টাকায়। আবার ২ নং গেইট থেকে পঞ্চবটির ভাড়া ৫ টাকা। সেই ভাড়াও দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ টাকায়।



বৃষ্টি হলেই বিসিক শিল্পনগরী এলাকার এই সড়কটি যেন চলে যায় অটো রিক্সা চালকদের নিয়ন্ত্রণে। অটো রিক্সার এই ভাড়া নির্ধারণের কোন ধরনের নীতিমালা না থাকায় চালকরা আদায় করছেন তাদের ইচ্ছামত ভাড়া। তাই বৃষ্টি হলে ভোগান্তি  পোহাতে হয় এখানকার মানুষজনকে। বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের। বিসিক এলাকার আশেপাশে বাড়ি ভাড়া বেশি হওয়ার কারণে অনেক শ্রমিক দূরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। যাদের বেশিরভাগই পঞ্চবটি, ফতুল্লা, পোস্ট অফিস, আলিগঞ্জ, কাঠের পুল, লালপুর, ভোলাইল, বক্তবলি, দেওয়ান বাড়ি, কাশিপুর এলাকা থেকে আসেন। বৃষ্টি হলে এই গার্মেন্টস শ্রমিকদেরকেই জিম্মি করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেন এই সড়কের অটোরিকশা চালকরা।



স্থানীয় একজন মুদি দোকানের মালিক তোফাজ্জল হোসেন জানান, বিসিক থেকে ফতুল্লার ভাড়া ১০ টাকা কিন্তু আজ বৃষ্টির কারণে অটো রিক্সার চালকরা ১০ টাকার ভাড়া ১৫ টাকা নিচ্ছে। কারণ জানতে চাইলে ঐ অটো রিক্সার চালক বলেন,
১৫ টাকা ভাড়ায় গেলে আসেন না হলে অন্য অটো দেখেন।  বৃষ্টির দিনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে প্রায় দিনই অটো রিক্সা চালক এবং যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়।



গার্মেন্টস কর্মী রুবেল মিয়া জানান, বিসিক থেকে কাশীপুরের ভাড়া ১০ টাকা কিন্তু বৃষ্টিতে এই ভাড়া দ্বিগুণ নেবে এটা আমাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়। কারণ এটা দেখার কেউ নেই। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরকে দ্বিগুণ ভাড়া ২০
টাকা দিয়েই যেতে হয়। 


স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, আকাশে মেঘ দেখলেই যেন অটো চালকরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। এভাবেই চলছে বৃষ্টির দোহাই দিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায়। বৃষ্টির দিনগুলোতে অটো রিক্সার চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে বাধ্য হয়ে আমাদের এই বাড়তি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যস্থলে যেতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বৃষ্টির দিনে বাড়তি ভাড়া দিয়ে যেতে যেতে অভ্যাস হয়ে গেছে বিধায় আমাদের এই হয়রানি দেখার কেউ নাই।


অটো রিক্সা চালক দুলু সরকারের কাছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি দিতে পারেননি কোন সন্তোষজনক উত্তর। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে ভিজে সকাল থেকে গাড়ি চালাচ্ছি। বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ি চালানো অনেক কষ্টের
কাজ।তাছাড়া বৃষ্টির দিনে সবাই গাড়ি বের করে না। বৃষ্টির কারণে রাস্তার খানাখন্দের মধ্যে অনেক পানি জমে তাই অনেক সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়। আর বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ি চালালে ঠান্ডা জ্বর হয়। তাই শুধু বৃষ্টির দিনে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি। অন্য দিনে আগের ভাড়া নিচ্ছি।



এদিকে বিসিকের ১ নং গেইট থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত ১০ টাকা ভাড়ায় যাত্রী তুলছেন অটো রিক্সা চালকরা। আর বৃষ্টিতে ভেজার ভয়ে হুমরি খেয়ে উঠছেন যাত্রীরা। মমিনুল ইসলাম নামের একজন যাত্রী বলেন ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা দিয়ে বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে। এরকম যাত্রী হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

সম্পর্কিত বিষয়: