নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রচন্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৭:৩৮, ১১ এপ্রিল ২০২৩

প্রচন্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ

চৈত্রের শেষের দিকে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে পুরো দেশ। কয়েক দিনের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার জনজীবন । বিশেষ করে বেশি বিপাকে  পড়েছেন নারায়ণগঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষ গুলো।


একদিকে রমজান মাস, তার উপর গরমের তীব্রতায় তৃষ্ণার্ত মানুষ ও প্রাণীকুলে নাভিশ্বাস উঠেছে। চারিদিকে একটু শীতল পরশ লাভের জন্য মানুষের যেন ব্যাকুল প্রচেষ্টা।


আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৩ এপ্রিল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে এবং শিগগিরই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।


আবহাওয়া অফিস জানায়, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে।


মঙ্গলবার  ( ১১ এপ্রিল) ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল নওগাঁর বদলগাছিতে, ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 


এদিকে তীব্র গরমে বাড়ছে নানা রকমের রোগ। বিশেষ করে ডায়রিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। বিশেষজ্ঞরা প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে পরামর্শ দিলেও কর্মজীবী লোকজন পিপাসা মিটাতে বাধ্য হয়ে ফুটপাতের শরবত, পানি পান করছেন। এতে করে পানিবাহিত অন্যান্য রোগও ছড়াচ্ছে দিন দিন।


তীব্র দাবদাহের কারণে ভিক্ষা করতে বের হতে পারেননি শারীরিক প্রতিবন্ধী রহমত আলী । তিনি বলেন, যেই গরম, শইল মনে অয় পুইড়া যায়। আইজকা দিনের বেলা আর ভিক্ষা করতে বাইর হই নাই। সারা দিন টিএনটি মাঠের কোনায় গাছতলায় বইয়া আছিলাম। রহমত আলীর মতো দিনজুড়ে তীব্র দাবদাহে নাকাল হয়েছে নারায়ণগঞ্জ শহরবাসী।


শহরের রিকশাচালক সামাদ আলী বলেন, চৈত্রের এই তীব্র রোদের কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারণে মানুষ কম বের হচ্ছে। ফলে আয়-ইনকাম কমে গেছে।


এদিকে দাবদাহে রোজাদারদের কষ্টও বেড়েছে। রোজার মাস হওয়ায় একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, পানি, আইসক্রিম খেয়ে তৃষ্ণা মেটাতেও পারছে না মানুষ। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীববৈচিত্র্যের ওপর।


শহরের বাসিন্দা মৌমিতা আক্তার বলেন, প্রচণ্ড গরম পড়েছে। বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। আমার সন্তান গত তিন দিন থেকে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভুগছে। জানি না কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে।”


কলেজ শিক্ষার্থী ফাহমিদা ফিমা কাছে এই গরমকে ‘আগুন’ মনে হয়েছে। ফিমা বলেন, দিনের বেলা রুমে বসে থেকেই মনে হচ্ছিল- গরমে মাথাটা ঘুরতেছে। ফ্যানের বাতাসে কিছু হয় না। বালিশ-বিছানা সবকিছু গরম। এই গরমে রোজা রেখে প্রচুর ডিহাইড্রেশন হচ্ছে।


আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গ্রীষ্মের আগে দাবদাহ যেমন বেড়েছে, তেমনই আওতাও বেড়েছে। দেশের পাঁচ বিভাগ ও এক জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহে বৃষ্টিরও কোনো সম্ভাবনা নেই।
 

সম্পর্কিত বিষয়: