নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪

মাদকের স্বর্গরাজ্য ফতুল্লার রসুলপুর

প্রকাশিত:০৬:৩৯, ১৭ জুন ২০২১

মাদকের স্বর্গরাজ্য ফতুল্লার  রসুলপুর

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বৃহত্তর রসুলপুরে হাত বাড়ালেই মাদক। রীতিমত মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে এলাকাটি। ফলে দিন-রাত মাদক সেবকদের পদচারনায় মুখরিত থাকে এলাকার অলি-গলি। ফলে এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদক সেবীর সংখ্যা। আর মাদকের টাকা জোগাড় করতে  নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে তারা।

 

একাধিক সূত্র মতে, মাদকের সহজলভ্যতায় এখানকার যুবসমাজ মাদকের নেশায় ডুবে মরছে। ফলে দিনকে দিন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার দলীয় এক শ্রেণির  নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে  মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঢাকার শ্যামপুর ও কদমতলী থানা এলাকার সাথে ফতুল্লা থানার সীমান্তবর্তী এলাকা রসুলপুরের সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার ফায়দাও তুলছে মাদক ব্যবসায়ীরা।

সূত্রমতে, রসুলপুরে মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা শিউরে ওঠার মতো। বলা চলে, ওই অঞ্চলের ঘরে ঘরে একপ্রকার নির্বিঘ্নে পৌঁছে যাচ্ছে মাদক। সন্ধ্যার পরে তো বটেই, দিনপদুপুরেও একপ্রকার ফেরি করে এই মরণ নেশা বিক্রি করা হচ্ছে। রসুলপুরের প্রায় প্রতিটি অলিগলিতে আস্তানা গেড়ে বসেছে মাদকের একাধিক চক্র। রসুলপুরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্যরা হলো মৃত আলির পুত্র মোঃ জয়নাল হাজারী (মুদি দোকানদার আমিরের বাড়িতে বসে বিক্রি করে), বেঈলের পুত্র চুল্লা বাবু,  ভাঙ্গারপুলের গেরগের বাবু (স্বাধীন মনিরের ভাই), একই এলাকার রাজা মিয়ার পুত্র আলমগীর, বাঁশবাগান এলাকার মাসুমের শালা হিমু, চুল্লা বাবুর বন্ধু জুয়েল। তাজুর বাড়ির ভাড়াটিয়া মুন্না ও তার স্ত্রী (বাসায় বসে মাদক ব্যবসা করে)। বাঁশবাগান এলাকার হাকিম পাটোয়ারীর ছেলে আনন্দ, ওয়াসার পাড়ের মুদি দোকানদার তাজুর ছেলে সুজন, পান্না মিয়ার ছেলে আমিন, বলা আলমগীর, বাগানবাড়ি এলাকার সেলিমের ভাই খোকন, শাহিদার স্বামী তাজু শেখ (মধ্য রসুলপুর মসজিদের সামনে ক্যারাম বোর্ডের দোকান), মধ্য রসুলপুরের মোঃ মান্নানের ছেলে সাজ্জাদ, একই এলাকার কাদেরের ছেলে ফয়সাল সহ আটো বহু সংখ্যক নাম জানা অজানা মাদক ব্যবসায়ী নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা করে আসছে।

 

একাধিক সূত্র জানায়, রসুলপুরের আনাচে-কানাচে প্রকাশ্যে বেচা কেনা হচ্ছে ইয়াবা, দেশি-বিদেশি মদ, হেরোইন ও গাঁজাসহ নানা মাদকদ্রব্য। এমনকি রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকাও হয়ে উঠেছে মাদক বেচাকেনার কেন্দ্রবিন্দু। এসব জায়গায় মাদক ব্যবসা এখন ওপেন সিক্রেট। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব পয়েন্টে প্রশাসনিক অভিযান চালানোর আগেই রহস্যজনকভাবে খবর চলে যায় মাদক সিন্ডিকেটের কাছে। ফলে মাদক চালানকারীরা সময়মতো আউটার সিগন্যালে নেমে সটকে পড়ে। একইভাবে বিকিকিনির পয়েন্টগুলোতেও ত্বরিত সব খবর পৌঁছে যায়। যে কারণে প্রশাসনিক অভিযানগুলো বারবারই ব্যর্থ হচ্ছে।

 

 তথ্য মতে,মাদক কারবারিরা রাতের আঁধারে নানা কৌশলে  বড় বড় মাদকের চালান নিয়ে এলাকায়। পরে তা  বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় খুচড়া আকারে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন অভিভাবকেরা। তারা মাদকের বিরুদ্ধে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকরী অভিযানের দাবি জানিয়েছেন।