নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

১১ মে ২০২৫

নির্বাচনী শোডাউনে  অস্ত্রের মহড়া, মন্ত্রী গাজীকে তলব 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:১৯:২৭, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

নির্বাচনী শোডাউনে  অস্ত্রের মহড়া, মন্ত্রী গাজীকে তলব 

নির্বাচনী শোডাউনে এক ব্যক্তির অস্ত্রের মহড়া ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীককে তলব করেছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় স্বশরীরে এসে ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে ওই প্রার্থীকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পেশকার ইবনে সাউদ। 


তিনি জানিয়েছেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে সসস্ত্র কর্মী ও ব্যাপক সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। যা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। পেশকার সাউদ আরও জানান, নির্বাচন আচরণবিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৮ (খ) ও ১১ (ঘ) ধারা মোতাবেক নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি শেখ আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ সংশ্লিষ্ট ওই প্রার্থীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে শুক্রবার তাকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। 
এদিকে বুধবার শোডাউনে প্রদর্শিত অস্ত্রটি রূপগঞ্জ থানা পুলিশ জব্দ করেছে। পরে লাইসেন্স বাতিলের জন্য আবেদন করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ। 


প্রসঙ্গত: বুধবার কয়েক’শ নেতা-কর্মীর মিছিল নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। ওই সময় তার কর্মী-সমর্থকদের মিছিলে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে শর্টগান প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম দস্তগীর গাজী নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে পুনরায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও। 


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুরে গোলাম দস্তগীর গাজীর সমর্থনে মুড়াপাড়া এলাকা থেকে উপজেলা পরিষদ ভবন অভিমুখে কয়েক’শ নেতা-কর্মীদের মিছিল বের হয়। এই মিছিলের একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি। ওই মিছিলের অগ্রভাগে এক ব্যক্তিকে তার কাঁধে শটগান ঝুলিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি গোলাম রসুল কলির ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। যোগাযোগ করা হলে গোলাম রসুলও বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তির নাম মো. জামান। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। শটগানটি জামানের নামে লাইসেন্স করা।


আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬ এর ২৫ (ক) অনুযায়ী, “কোন ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্সে এন্টিকৃত অস্ত্র আত্মরক্ষার নিমিত্ত নিজে বহন/ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অন্যের ভীতি/বিরক্তি উদ্রেক করতে পারে এরূপভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল হক বলেন, শুধু নির্বাচন চলাকালীন সময়ই নয়, কোন সময়ই লাইসেন্সধারী ব্যক্তিও তার অস্ত্র প্রকাশ্যে প্রদর্শন করতে পারবেন না। এইটা নীতিমালা বহির্ভূত। এই বিষয়ে আমরা শুনেছি। তবে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ কেউ এখন পর্যন্ত করেনি। যদিও অস্ত্রের ব্যাপারগুলোতে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।

অপরদিকে, আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্বাচনী এলাকায় বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করেছেন। এমনকি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা তার সাথে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ বলে জানান সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল হক।


 

সম্পর্কিত বিষয়: