নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

০৪ মে ২০২৪

ফতুল্লায় হত্যা মামলার আসামি হতে চায় মাদ্রাসার সভাপতি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:৩৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ফতুল্লায় হত্যা মামলার আসামি হতে চায় মাদ্রাসার সভাপতি

নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লার বক্তাবলী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মডেল মাদ্রাসার সভাপতি হওয়ার জন্য নানামূখী অপতৎপরতা শুরু করেছে হত্যা মামলার আসামী আব্দুল বারেক মোল্লা।

একজন চিহ্নিত অপরাধী বারেক মোল্লা একের পর এক অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু নোমান মুহাম্মদ অলী উল্লাহকে বেদম মারধর ও গলা টিপে হত্যার চেষ্টার পর আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে বারেক মোল্লা ।

এর আগেও ঐ মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল গনিকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছিল বারেক মোল্লা ও তার সহযোগীরা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ভুমিদস্যুতাসহ অনেক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। 

জানা গেছে ,গত বছরের ৬ আগষ্ট আব্দুল বারেক মোল্লার বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জে লৌহজং থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।  মুন্সীগঞ্জে লৌহজংয়ে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ট্রলার ডুবিতে ৭জন নিহত হওয়ার ঘটনায় এম.এল ইত্তেহাদ ঈশাত বাল্কহেডের মালিক, চালক ও হেল্পারদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিহত দুই বোন এপি ও পপির ভাই রোবেল বাদী হয়ে লৌহজং থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। জানা গেছে পিকনিকের ট্রলারে ধাক্কা দেয়া বাল্কহেডের মালিক বারেক মোল্লা এ মামলা দায়ের করার পর বেশ কিছু দিন তিনি পলাতক ছিলেন। 

আব্দুল বারেক মোল্লার বিরুদ্ধে গত ১৮ জানুয়ারি  সকালে ফতুল্লা থানায় ৮জনের নামে উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৪/৫জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেছেন  বক্তাবলী  মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু নোমান মুহাম্মদ অলী উল্লাহ।

একই সাথে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে বেদম মারধর ও গলা টিপে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আবু তালেবকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মাদ্রাসার ঐ অধ্যক্ষ একই ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কছে অভিযোগ দায়ের ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যাকে অবহিত করেন। 

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে  হঠাৎ করে  মাদ্রাসায় এসে স্থানীয় আব্দুল বারেক মোল্লা, ওমর ফারুক, আক্কাস আলী আব্দুল হাই কানু, নাসির মাতবর,সদর উদ্দিন মেম্বার, আলী হোসেন, আক্তার হোসেনসহ আরো ৪/৫জন মিলে দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে অফিস কক্ষে প্রবেশ করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অলী উল্লাহকে এলোপাথারী মারাধর শুরু করে। আসামী বারেক মোল্লা ও ওমর ফারুক মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গলাটিপে ধরে শ^াসরোধ করে হতার চেষ্টা চালায়।

এদিকে চিহ্নিত অপরাধী আব্দুল বারেক মোল্লা মাদ্রাসার সভাপতি হওয়ার চেষ্টার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষকে বাঁধা মনে করছেন। এজন্য অধ্যক্ষকে সরিয়ে দেয়ার জন্য শুরু করেন নানামূখী ষড়যন্ত্র। মাদ্রাসার কতিপয় শিক্ষককে হাতে নিয়ে সহজ সরল শিক্ষার্থীরদের ভুল বুঝিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। ৎ

অধ্যক্ষকে হত্যার চেষ্টার ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য কতিপয় শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করে। অধ্যক্ষ অলী উল্লাকে শায়েস্তা করার জন্য দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আসে। একটি এমপি ভুক্ত  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টাকা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ একক ভাবে উত্তোলন করার কোন সুযোগ না থাকায় দুর্নীতির অভিযোগ হাস্যকরে পরিনত হয়।  

এদিকে বারেক মোল্লাদের অপতৎপরতা কারনে প্রানের ভয়ে মাদ্রায় যেতে পারছেন না অধ্যক্ষ অলী উল্লাহ। তিনি বিষয়টি সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। 

অধ্যক্ষ অলী উল্লাহর উপর হামলার ঘটনায় থানায় দায়ের করা অভিযোগ তদন্তের জন্য ফতুল্লা থানার এস আই মফিজুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা এস এম আবু তালেব এর আগে জানিয়েছেন ,অধ্যক্ষের উপর হামলা ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বারেক মোল্লা,মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কে মারধর করার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, তিনি কাউকে মারধর করেনি। মাদ্রাসার অধ্যক্ষের নিকট তিনি পাওনা টাকা চাইতে গিয়েছিলেন। এর চাইতে বেশী কিছু নয়।

লৌহজং থানায় তার বিরুদ্ধে মামলার প্রশ্নে তিনি জানান, এটা দূর্ঘটনার মামলা। নিন্ম আদালত  থেকে  তিনি জামিন নিয়েছেন। মামলাটি চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম জানান,অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
 

সম্পর্কিত বিষয়: