নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

০২ মে ২০২৪

ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের সোর্স পরিচয়ে বেপেরোয়া

সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে মূর্তিমান আতঙ্ক ‘তৌহিদ ’

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২০:১৫, ৫ এপ্রিল ২০২৪

সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে মূর্তিমান আতঙ্ক ‘তৌহিদ ’

সোনারগায়ের কাঁচপুরে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ডিবি পুলিশের সোর্স তৌহিদ। সোর্স পরিচয়ে প্রভাব ঘাটিয়ে গড়ে তুলেছে ১০/১২ জনের নিজস্ব একটি বাহিনী। এ বাহিনীর অন্যতম হলো কাউসার, সালাম, সাগর, জসিম, আকিব অন্যতম।

তৌহিদ বাহিনী কখনও পুলিশ, কখনও ডিবি, কখন র‌্যাব পরিচয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে নানা অপরাধ কর্মকান্ড করছে। এরফলে কাঁচপুরের সাধারণ মানুষ ও ভুক্তভোগীদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্কের আরেক নাম সোর্স তৌহিদ ও তার বাহিনী।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর  নাম ভাঙ্গিয়ে সংঘবদ্ধভাবে নানা অপরাধে জড়িত রয়েছেন তারা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আর্শিবাদপুষ্ট হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সোনারগাঁ  থানা এলাকায় বেপরোয়া এবং ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে সোর্স পরিচয়ে তৌহিদ ও তার বাহিনী।

অভিযোগ উঠেছে বর্তমানে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অবৈধ ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরিসহ অসামাজিক কার্যকলাপ এবং অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রন করছেন তৌহিদ বাহিনী। নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে তৌহিদের নিয়ন্ত্রণে চলছে সোনারগায়ের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ও জুয়ার স্পট। 

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে তৌহিদ প্রতিটি জুয়া ও মাদকের স্পট, ভাঙ্গারি, চোরাই তেল থেকে দৈনিক মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। প্রশাসনের এমন নীরবতার কারণেই দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে অপরাধীদের সংখ্যা।

তৌহিদ  ওরফে সোর্স তৌহিদ, জুলফিকার আলী মোল্লার ছেলে কাঁচপুর ইউনিয়নের সোনাপুর মতিন খান প্লটের ভাড়াটিয়া। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে তৌহিদের  শেল্টারে সোনারগা থানা এলাকায় চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। তৌহিদের শেল্টারে  কাচপুর সেনপাড়া, চেঙ্গাইল, কাঁচপুর খালপার সোনাপুর ও বেহাকৈর সহ অসংখ্য স্পটে চলছে মাদক ব্যবসা।

তাদের এই মাদক ব্যবসায় বাধা দিলে তাকে নিয়ে চলে ষড়যন্ত্র। কখনো ডিবি পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি ও মিথ্যা মামলা আবার কখনো মারধরের হুমকিও দেওয়া হয়। 

সূত্রে জানা যায়, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের এক সদস্যদের সাথে সোর্স তৌহিদের ভালো সখ্যতা থাকায় বুক ফুলিয়ে বীরদর্পে তার বাহিনীর মাধ্যমে রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

অনেক সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালানোর আগেই সব মাদক ব্যবসায়ীদের পূর্বেই সতর্ক করে দেন সোর্স তৌহিদ । যার ফলে অভিযান চালিয়েও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সফলতা পাচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

অভিযোগ উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সোর্সদের কথা মতো ভালো মানুষকে হয়রানি করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। 

সোর্সদের কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে মাসোহারা আদায় সহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছেন। 

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় সোর্সদের অপরাধ কর্মকান্ড, অত্যাচার ও সোর্সদের অপরাধ কর্মকান্ডের ইতিহাস বছর জুড়েই আলোচনায় আসে। ভুক্তভোগীরাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। 

সোর্সদের মিথ্যা তথ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন অনাকাঙ্কিত ভাবে বিপদের সম্মুখীন হয়, তেমনি সাধারণ মানুষও হয় নির্যাতিত। তাই তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, সোর্স হওয়ার সুবাদে তৌহিদ প্রতিটি এলাকায় নির্বিগ্নে বিভিন্ন অপরাধ অপকর্মসহ মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ যদি প্রতিবাদ করে তাহলে তাদের কাছে থাকা মাদকদ্রব্য দিয়ে প্রতিবাদ কারিকে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। 

তাছাড়া পাড়া-মহল্লায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল তৎপরতা কমে যাওয়ায় প্রতিটি অলিতে-গলিতেই বাড়ছে অপরাধ-অপকর্মসহ মিলছে মাদক। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি মাদক নির্মুলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমাদের স্বপ্নদেখা সন্তান গুলো অচিরেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে আর ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের যুব সমাজ।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। মাদকের সাথে আমাদের কোন আপোষ নেই। জেলা পুলিশ থেকে মাদকের সাথে জড়িত সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ রয়েছে। পুলিশের কোন সোর্স নেই বলে জানান ওসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা বলেন, মাদকের সাথে আমাদের কোন আপোষ নেই। আমাদের কোন সোর্স নেই। কেউ পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চললে, তাকে আমরা ছাড় দেব না। তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।