নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

১৯ মে ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিলে ময়লা নিয়ে নোংরামি, পকেট ভারী হবুলের

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৯:১৪, ৭ মে ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিলে ময়লা নিয়ে নোংরামি, পকেট ভারী হবুলের

আবাসিক এলাকায় অন্যের জমি দখল করে ময়লার পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক রাখার জন্য জায়গা ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হীরাঝিল আবাসিক এলাকার সভাপতি হাবিবুল্লা হবুল ওরফে হবুল সাব-এর বিরুদ্ধে।

ময়লার পরিত্যক্ত প্লাষ্টিকের দূর্গন্ধে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ঐ এলাকা। তীব্র গরমের ভ্যাপসা গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ এলাকাবাসী। প্লাষ্টিকের বর্জের স্তুপে ঘটছে অহরহ ছোট ছোট অগ্নিকান্ডের ঘটনা। তবে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন প্লাষ্টিকের এ বর্জে যদি বড় ধরণের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে তবে ক্ষয়-ক্ষতি হবে অনেক। 

সিদ্ধিরগঞ্জের হীরঝিল আবাসিক এলাকাবাসী জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল ৩ নং গলির সাহাবুদ্দীন চৌধুরী বাবুর জমি মামলা চলমানের কারণে ভবন নির্মাণ না করে খালি ফেলে রাখে। এ সুযোগে হীরাঝিল আবাসিক এলাকার সভাপতি হাবিবুল্লা হবুল ওরফ হবুল সাব উক্ত খালি জমি দখল নাসিকের বর্জ্য নিরসনকারীদের কাছে ভাড়া দেন।

কিন্তু জমির মালিক সাহাবুদ্দীন চৌধুরী বাবু অস্বীকার করে বলেন, আমি জায়গা কাউকে ভাড়া বা কোন কিছু রাখার অনুমতি দেইনি। বরং জমিতে মামলা চলমান থাকায় কোন কাজ না করে খালি রেখে দিয়েছি। তবে কে বা কারা জায়গাটি অবৈধ দখল করার জন্য এখানে প্লাষ্টিকের বর্জ্য রাখছে আমি জানি না।

এতে তিনি তাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ৯৫ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করেন বলে জানিয়েছেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ফোর ম্যান নাজমুল ইসলাম। তিনি জানান, এলাকাবাসীর বাসা থেকে ময়লা নেয়ার সময় প্লাষ্টিকের  দ্রব্যাদি তারা উক্তস্থানে জামিয়ে রাখেন। কয়েকমাস পর বর্জ্য পাহাড়সমস্তুপাকারে হলে তারা তা পাইকারী বিক্রি করে দেয়।

গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লেগে যায় পরিত্যাক্ত প্লাষ্টিকের স্তপে। পাশেই ২ সন্তান আর স্বামী নিয়ে বসবাস করেন জান্নাতুল। আগুনের উপস্থিতি টের পেয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ছাদ থেকে আশেপাশের মানুষকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। তার ডাকে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ বিষয়ে তিনি জানান, আমি বাসায় শুয়েছিলাম। হঠাৎ কিছু একটা বিস্ফোরনের শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম থেকে উঠে দেখি পুরো ঘর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। তারপর বাড়িওয়ালা আন্টিকে জানালে তিনিসহ আমরা ছাদ থেকে পানি দিয়ে আগুন নিভাই। এ সময় আশেপাশের মানুষও আগুনের ভয়াবহতা দেখে আগুন নেভাতে এগিয়ে আসে।

বাড়ির মালিক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, আবাসিক এলাকার ভিতরে এমন ময়লার পরিত্যক্ত প্লাষ্টিকের গোডাউন রাখার মানেই হয় না। এসব প্লাষ্টিক থেকে প্রচুর দূর্গন্ধ আসে। এতে এই গরমেও আমাদের জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়।

এছাড়া প্রায়ই এই জায়গায় আগুনের ঘটনা ঘটে। একবার আগুন লেগে আমাদের বাড়ির জানালার সব কাঁচ ভেঙ্গে যায়। এরপর আশেপাশের মানুষের সহায়তায় আগুন নেভাতে পারি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের জানালে তারা কোন ব্যবস্থা নেন না। অথচ এর পাশেই আমাদের রান্নাঘর। যেকোন সময় গ্যাসের লাইনে আগুন লেগে গেলে আমাদের বাড়ির বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় বস্তায় পরিত্যক্ত প্লাষ্টিকের বোতল, অ্যালকোহল যুক্ত বডিস্প্রে ও গ্যাস লাইটার সহ ভয়ংকর সব দাহ্য পদার্থ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এত তীব্র গরমে এসব দাহ্য জিনিস গুলো বোমের মত হয়ে যায়। আর এ স্থানের তিন পাশের সব বিল্ডিং এ রান্না ঘর থাকায় যেকোন সময় এখানে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটতে পারে বলে জানায় এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ময়লা ব্যবস্থাপনার ফোরম্যান নাজমুল হাসানকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান আমরা খুব দ্রুত এসব ময়লা সরিয়ে দিব। এর বেশি আমরা কিছু জানিনা হবুল সাহেব জানেন। আমরা তাকে মাসে ৯৫ হাজার টাকা দেই।

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে হাবিবুল্লা হবুল বলে, এখানে কাউকে ভাড়া দেওয়া হয়নি। এখানে শুধু ময়লার গাড়ি রাখা জন্য বলেছি। প্লাষ্টিক রাখারতো প্রশ্নই আসে না বরং আশেপাশের বাড়িওয়ালারা এখানে প্লাষ্টিক ফেলে।
 

সম্পর্কিত বিষয়: