
রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে ছাত্রদল নেতার এলোপাথারি গুলিতে ব্যবসায়ী মামুন মিয়ার হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
শুক্রবার (১৩ জুন) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের উপজেলার গোলাকান্দাইল গোলচত্বর এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে কয়েক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। বিক্ষোভকারীরা হত্যা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছিলেন উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছাব্বির হোসেন খোকা। গত মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকালে তিনি এলাকায় ফিরলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে।
খোকাকে আটক করার খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ,জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাবু নিজস্ব লোকজন নিয়ে খোকাকে ছাড়িয়ে নিতে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় ।
এসময় গুলিবিদ্ধ হন স্থানীয় মুদি দোকানদার মামুন মিয়া (৩৫)। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার প্রধান আসামি জাহিদুল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা।
নিহতের স্ত্রী ইমা আকতার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে প্রতিদিন দোকান চালিয়ে সংসার চালাত। আজ সে নেই, আমার ছেলেমেয়েরা বাবাহারা। যারা তাকে হত্যা করেছে, তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা তার হত্যার বিচার চাই।
নিহতের বড় ভাই যুবদল নেতা বাদল মিয়া বলেন,আমার ভাই মামুনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনদিন হয়ে গেল, কিন্তু এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ওমর হোসেন বলেন, মামুন ছিলেন একজন নিরীহ দোকানদার। যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে সড়ক অবরোধ, থানা ঘেরাও, হরতালসহ কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
জানতে চাইলে রুপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ তৎপর রয়েছে। অতি দ্রুত সময়ের ভেতর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।