নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

০৯ অক্টোবর ২০২৪

শিমরাইল-আদমজী-চাষাঢ়া সড়ক মরণফাঁদে পরিণত

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:৩২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিমরাইল-আদমজী-চাষাঢ়া সড়ক মরণফাঁদে পরিণত

টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে বেহাল অবস্থা হয়ে আছে শিমরাইল-আদমজী-চাষাঢ়া সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশ। সড়কটির বিভিন্ন স্থানের খানাখন্দের ভেতর পানি জমে থাকায় এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে। 

মূলত সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন যাবত পুটো সড়কজুড়ে ছোট ছোট খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে রয়েছেন। কিন্তু এই কদিনের টানা বৃষ্টিতে শিমরাইল থেকে চাষাঢ়ার ১২ কিলোমিটারের সড়কের বেশিরভাগ স্থানেই ইট-খোয়া ওঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। 

আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদমজী-চাষাঢ়া সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।  

তথ্যমতে, সড়কটির সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে পাঠানটুলী এলাকা অংশ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এর অধীনে। আর পাঠানটুনী এলাকা হতে নারায়ণগঞ্জ সদরের চাষাঢ়া এলাকা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের আওতায়।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাত্রীদের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রায় সময়ে মানুষজন রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহনগুলোকে চলতে হচ্ছে এঁকেবেঁকে। যা গাড়ি চালকদের জন্যে অস্বস্তিকর। মূলত রোগী নিয়ে এই সড়কে দিয়ে চলাচল করা অনেকটা অসম্ভবের পথে। 

সড়কটির পুরো অংশই কম বেশি বেহাল অবস্থা হলেও এর মধ্যে সড়কটির সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও চৌধুরীবাড়ি অংশে ভয়াবহ অবস্থার দেখা মিলেছে। বিশেষ করে ইপিজেড অংশে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনের সৃষ্ট গর্ত বেশ বড় ধারণ করেছে।

তাই সেখান দিয়ে ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে পারাপারে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। এজন্য যানবাহনের ধীরগতির কারণে সৃষ্টি হয় যানজট। ভোগান্তি পোহাতে হয় জনসাধারণকে।

আদমজী-চাষাঢ়া সড়কটি সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর জন্যে নারায়ণগঞ্জ শহরের যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়ক। এখানে আদমজী ইপিজেড, ডিপিডিসির কার্যালয়, সিদ্ধিরগঞ্জ সাইলো, সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন, আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, র‌্যাব-১১ এর সদর দপ্তর, সিদ্ধিরগঞ্জ টেলিফোন অফিস, পদ্মা ও মেঘনা ডিপোসহ সড়কের দুপাশে অসংখ্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান অবস্থিত থাকায় মানুষজনের যাতায়াত তুলনামূলক বেশি। 

জানা গেছে, বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ শত শত বাস, ট্রাক, পণ্যসামগ্রী পরিবহন, তেলের লরী চলাচল করে। কিন্তু সড়কটি চলাচলের পুরো অযোগ্য হয়ে যাওয়ায় যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা করা হচ্ছে।

এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী কয়েকজন যাত্রী জানান, এই সড়কটি নারায়ণগঞ্জের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। এতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখনো পর্যন্ত সংস্কার না করায় টানা বৃষ্টিতে পুরো সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। 

কর্মজীবিদের কর্মস্থলে যাতায়াতে অনেক কষ্ট করতে হয়। কবে নাগাদ এই কষ্টের অবসান ঘটবে তা জানা নেই তাদের। তাই অতি দ্রুত সড়কটির সংস্কার দাবি জানায় তারা।

অটোরিকশা চালক আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, সড়কের দুরাবস্থার কারণে বড় বড় যানবাহনগুলো কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও তাদের চালিত অটোরিকশা নিয়ে এই সড়কে চলাচল করা অসাধ্য বিষয়। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা কাত হয়ে যায়। অনেক যাত্রী পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন।

এক ট্রাকচালক জানান, সড়কটির অধিকাংশ স্থানেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাই তাদের মালামাল নিয়ে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা অনেকটাই অসম্ভব হয়ে যাচ্ছেন।


গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সংস্কারের ধীরগতি কারণ জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সহজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস জানান, খুব শিগগিরই শিমরাইল থেকে আদমজী এলাকা পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার করা হবে। আমাদের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

এখন শুধু বাজেটের অপেক্ষায় রয়েছি। বাজেট এলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আমরা আপাতত আদমজী এলাকায় সৃষ্ট বড় বড় খানাখন্দ সাময়িক সময়ের জন্য সংস্কার করে দিচ্ছি।