নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

১০ মে ২০২৫

আড়াইহাজারে ডাকাত আতংক, এক রাতে ৬ বাড়িতে ডাকাতি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৯:৩০, ১৭ জুলাই ২০২৩

আড়াইহাজারে ডাকাত আতংক, এক রাতে ৬ বাড়িতে ডাকাতি

আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রবিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাতে ৬ বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

এর মধ্যে স্থানীয় দুপ্তারা ইউনিয়নের কামরানীর চর হাটখোলাপাড়া এলাকায় পরপর চারটি বাড়িতে  ডাকাতদল হানা দেয়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

তবে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। কিন্তু কাউকে আটক করতে পারেনি। জানা গেছে, কামরানীর চর বাজারের ব্যবসায়ী সাঈদ মোল্লার বাড়িতে একদল মুখোপড়া ডাকাতদল বিল্ডিংয়ের প্রধান গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। 

পরে তারা ঘরে আসবাবপত্র তছনছ করে। এক পর্যায়ে আলমারী ভেঙে ৫০ -৬০ হাজার টাকা, একটি দামী মোবাইল ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়। এসময় পরিবারের সদস্যকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অকথ্যভাষায় গালাগালি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

ঘটনার পর থেকে এই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। একই রাতে কামরানীর চর হাটখোলাপাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মান্নান ভূঁইয়া, অটো চালক সাবুল ও ব্যবসায়ী রায়হান খন্দকারের বাড়িতে ডাকাতদল হানা দিয়ে স্বর্ণলঙ্কারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুটে নেয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় যুবক কামরুল। 

কামরুল বলেন, এভাবে একের পরএক বাড়িতে ডাকাতরা হানা দিয়ে আমরা কিভাবে পরিবার নিয়ে বসবাস করব। একই রাতে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের সেলিম ও মাইউদ্দিনের বাড়িতেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

রাত নামতেই পুরো এলাকাজুড়ে আতংক দেখা দিচ্ছে। ডাকাতের ভয়ে রাতের আধাঁরে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিচ্ছে। 

স্থানীয়রা বলেন, এভাবে একের পর এক বসতবাড়িতে রাতের আধারে ঘুমন্ত মানুষের সর্বস্ব লুট করা হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ কিছুই করতে পারছেনা। ডাকাত আতংকে রাতের আধারে মানুষ ঘুমাতে পারছেনা। পুলিশের টহল বাড়ানোর দাবী জানান এলাকাবাসী। 

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দুবৃর্ত্তদের গ্রেপ্তার ও লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে তা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে একের পরএক বসতবাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় পুরো উপজেলাজুড়ে মানুষের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৪ জুন দিবাগত রাতে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের দহর মারুয়াদী এলাকার চা বিক্রেতার আরিফুল হকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তার বাড়ি থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

১৯ জুন ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের নরিংদী এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী হাফিজউদ্দিন ও মফিজউদ্দিনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। 

রাত ২টার দিকে একদল মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী ব্যক্তি তার দ্বিতীয়তলা ভবনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রবেশ করে। পরে তারা স্ত্রের মুখে জিম্মি করে ক্ষকে সবাইকে আটক রাখে। পরে আলমারী ভেঙে প্রায় ২০ ভরি  ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। 

মফিজউদ্দিনের বাড়ির প্রধান গেট ভেঙে একদল দুবৃর্ত্ত ভেতরে ঢুকে। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলমারী ভেঙে ৪ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা এবং বেশ কয়েকটি মোবাইল সেট লুটে নেয়।

একই রাতে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায় প্রবাস ফেরত আলম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দেয়। 

এর মধ্যে প্রবাসীর বসত ঘরে ঢুকে ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও বেশ কিছু ডলার লুটে নেয়। প্রতিবন্ধী নজরুলের ঘর থেকে স্থানীয় সমিতি থেকে উত্তোলনকৃত (কিস্তি) টাকা ৪০ হাজার টাকা ও ৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

১৫ জুন স্থানীয় শিবপুর এলাকায় পাওয়ারলুম ব্যবসায়ী মমতাজ হোসেনের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দেয়। 

এই বাড়ি থেকে ১০ ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়। ৩১ মে দিনেদুপুরে শফিকুল ইসলাম নামে এক স্কুল শিক্ষকের ভবনে দুবৃর্ত্তরা হানা দেয়। এই বাড়ি থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কা ও নগদ ৩০ হাজার টাকা লুটে নেয়।