সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিকের ৫নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের কর্মী সভা প্রগতি সংসদে অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে চরম ক্ষোভ ও বিভক্তি ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। কর্মী সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের কেউ উপস্থিত না হওয়ায় গুরুত্ব হারিয়েছে ওই কর্মীসভা।
অভিযোগ উঠেছে, রেবতী মোহন স্কুল মাঠে নির্ধারিতওই কর্মীসভা স্থগিত করার পর প্রগতি সংসদে কর্মী সভায় আয়োজন করায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে আয়োজকদের নিয়ে। কাদের স্বার্থে এই কর্মী সভা করা হলো, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
মোটকথা বুধবার বিকালে অনুষ্ঠিত ওই কর্মীসভা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে পুরো সিদ্ধিরগঞ্জের আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে।
এ নিয়ে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন পন্থীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে এ কর্মী সভায় নেতাকর্মীদের ঐক্যের পরিবর্তে ভাঙ্গণের সুর বাড়ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বদনাম করার জন্য একটি চক্র এই কর্মীসভার পেছনে কাজ করেছে।
জানা গেছে, প্রগতি সংসদে অনুষ্ঠিত কর্মী সভার ব্যানারে লেখা ছিলো সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের নির্দেশনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অথচ এ সভায় থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা যোগ দেননি। তবে সভায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম উপস্থিত হলেও অথিতির আসনে স্থান পাননি।
উল্টো বিতর্কিত সাবেক নারী কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলাকে অতিথির আসনে স্থান দেয়ায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আবার অনেকে প্রতিবাদ স্বরুপ সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া সভার দিন দুপুরে প্রগতি সংসদে এসে এ সভা করতে নিষেধ করে যান। এবং থানা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মতিউর রহমান ব্যাপারীসহ অন্য নেতৃবৃন্দদের কাছে জানতে চান রেবতী মোহন স্কুলে সভা না করে প্রগতিতে কেনো আয়োজন করা হলো।
এছাড়া অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত কয়েক নেতা তাদের বক্তব্যে সভাস্থলে হাইব্রীড নেতা-কর্র্মীদের পদচারণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও নির্ধারিত স্থানের কর্মী সভা না করে প্রগতি সংসদে করাসহ কিশোর ও শিশুদের উপস্থিতিও সভাকে বিতর্কিত করে তোলে।
তৃণমূলের মনে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে, কেনো, কার ইশারায় প্রগতি সংসদে সভা হলো, এরা কোন পন্থি, কার হয়ে কাজ করছে ?
অনেককেই আবার জেলা, মহানগর ও থানার নেতৃবৃন্দের নির্দেশ ছাড়া এবং তাদের অনুপস্থিতিতে সভা করাকে দলের বিরুদ্ধাচরণ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, এসব হাইব্রিড নেতাকর্মীদের কারনেই ত্যাগী নেতাকর্মীরা দল ছেড়ে ঘরমূখী হয়ে পড়েছে। এতে সাংগঠনিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়ছে সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামীলীগ।
যার প্রমান কর্মী সভায় প্রকৃত আওয়ামীলীগারদের অনুপস্থিতি এবং শিশু কিশোর ও হাইব্রীডদের উপস্থিতি। যারা অন্য দলের হয়ে সুবিধা নিয়ে দিনের আলোতে নৌকা রাতের অন্ধকারের অন্যদলের নামে রাম রাম করে বেড়ায়।
কর্মী সভায় জেলা, মহানগর ও থানার শীর্ষ নেতৃবৃন্দের অনুপস্থিতি, হাইব্রীড ও কিশোরদের উপস্থিতির বিষয়ে মতি ব্যাপারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়েই ফোনটি কেটে দেন। পরে আবার তাকে আবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভি করেননি।
এবিষয়ে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মিয়া বলেন, নির্ধারিত স্থানে সভা না হওয়ায় স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়াও কর্মী সমাবেশের স্থান নিয়ে দুই দলে বিভক্তি হয়ে পড়েছে কর্মীরা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান (বিএসসি) জানান, ৫ নং ওয়ার্ডের সভা স্থগিত করা হয়েছে, তাই তিনি সভায় যাননি।
স্থগিত সভা প্রগতি সংসদে হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওখানে কিসের সভা হয়েছে তিনি জানেন না। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।