
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, এই বন্দর হল একটি শান্তিপ্রিয় এলাকা। কিন্তু গত ১৫ বছর এই শান্তিপ্রিয় বন্দরকে অশান্তি করে রাখা হয়েছিল।
এই বন্দরের মানুষের অনেক সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি ও ভূমি দস্যুতা স্বীকার হয়েছে এবং অনেকের সম্পদ জোর করে কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল আওয়ামী লীগের দোসররা। সেই অবস্থা বাংলাদেশে আর হতে দেওয়া হবে না।
আমি বলতে চাই যারা আমাদের এখন বিএনপি করে তারা যেন আওয়ামী লীগেরকে অনুসরণ না করে। তারা যদি সেই অনুসরণ করে তাহলে তাদের স্থান কিন্তু বিএনপিতে হবে না।
আপনারা দেখেছেন ৫ই আগস্ট এর পরে আমাদের দলের কিছু নেতার পাখা গজিয়েছিল। আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে আমাদের ৬হাজার নেতাকর্মীদেরকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করেছে।
যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে তাদেরকে জেলেও নিতো। সুতরাং বিএনপি করলেও পার পাওয়া যাবে না। যে অন্যায় করবে তাকে শাস্তি পেতে হবে। এদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই আইনে সকলের সমান যে অন্যায় করবে তাকে শাস্তি পেতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন বন্দর থানা অন্তর্গত ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মীসভা ও বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেল তিনটায় বন্দর ২৫নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ লক্ষণখোলা সিটি মসজিদের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে লুটপাট দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী করে প্রধানমন্ত্রীর পরিবার থেকে শুরু করে এমপি মন্ত্রীরা কোটি কোটি টাকা কামিয়ে বিদেশে পাচার করেছে। আপনারা হয়তোবা জানেন আওয়ামী লীগের আমলের চট্টগ্রামের এক ভূমি প্রতিমন্ত্রী জাবেদ তর নাকি লন্ডনে ৬৩২টি বাড়ি রয়েছে ।
একজন মানুষের বিদেশে কি এতগুলো বাড়ির প্রয়োজন আছে। তাহলে আপনারা বুঝেন আওয়ামী লীগের আমলে তারা কিভাবে দেশের মানুষকে অন্যায় অত্যাচার করে কিভাবে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে ৬৩২টি বাড়ি করেছে।
যার ফলে ছাত্র- জনতার আন্দোলনে পাঁচই আগস্ট আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছেড়ে দের ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। শুধু তাই না সাথে সাথে তার মন্ত্রিপরিষদ এমপি শুরু থেকে শুরু করে নেতাকর্মীরাও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজকে গণতন্ত্রের পথে যাচ্ছে। এদেশকে টেকসই গণতন্ত্র হিসাবে একমাত্র করতে পারে সে দল হল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছিল এদেশের মানুষের উন্নয়ন ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।
আপনারা জানেন ২০০৭ থেকে ২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কোন দুর্নীতির কোনো কিছু বের করতে পারে কিনা। কিন্তু তারা বরাবরই কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।
তারা কি করল জিয়া চ্যারিটেবলে কুয়েতের আমিরের দেওয়া ২কোটি টাকা যা তার ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে সেই একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই বৃদ্ধ বয়সে ৬ বছর জেল খাটিয়েছিল।
সুতরাং শেখ হাসিনা যে দুর্নীতি ও চুরি করেছে তার জন্য তাকে কত বছর জেল খাটতে হবে তা আপনারাই বলেন। আর এই যে ২০১০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে তার জন্য কি হবে তা বাংলাদেশের জনগণই বিচার করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কার করতে চাই। সেই সংস্কার হল রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার। সেই সংস্কারের মাধ্যমে এমন পরিবেশ হবে জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবে। কিন্তু আজকে সেই অবস্থা থেকে দেশকে অন্যদিকে নিতে চাচ্ছে একটি দল। যারা দাঁড়িপাল্লা নিয়ে এসেছে তারা এখন বলছে তারা পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়।
পিআর পদ্ধতি হলো আপনি কোন ব্যক্তিকে ভোট দিবেন না। শুধুমাত্র দলগুলো দাঁড়াবে কেন্দ্রে থেকে পছন্দ অনুযায়ী আপনাদের প্রার্থী দেওয়া হবে। এমপি হতে পারে সাতক্ষীরার হতে পারে রংপুরের দল যাকে পছন্দ করে দিবে সেই আপনার এমপি বানাবেন।
আমরা কি সেটা চাই আমরা সেটা চাই না আমরা চাই আমাদের পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে এমপি বানাবো। যে ব্যক্তি সব সময় মানুষের জন্য কাজ করে। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বলেছেন জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস।
সুতরাং আমরা জনগণকে ভালোবাসবো আমরা জনগণের সাথে থাকবো। জনগণের বিপদ-আপদে আমরা তাদের পাশে থাকবো তারা আমাদের সাথে থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান চুন্নুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, বন্দর থানা বিএনপির শাহেনশাহ আহমেদ, বন্দর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দর ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন নসু, সহ- সভাপতি আজিম সাউদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান টিলু, সহ- সাংগঠনিক ফজলুল হক ফজু, ক্রীড়া সম্পাদক আবু তাহের, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ, ২৫নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা আব্দুর রহমান প্রমুখ।