নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নুর ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তি পুলিশের নির্যাতনে মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর স্থানীয়রা পুলিশকে ২ ঘন্টা আটকে রাখে। পরবর্তীতে সোনারগাঁও থানার ওসি ও সার্কেল এএসপি অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। নিহত নুর ইসলাম উপজেলার জামপুর এলাকা মৃত ফালু মিয়ার ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৬ নভেম্বর) রাতে সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের বুরুন্দী এলাকায়।
নিহতের পরিবারের দাবী, নুর ইসলাম শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। হার্টে রিং পড়ানো ছিল। পুলিশ বাড়িতে ঢুকে তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ এনে টাকা না দিলে মামলা দিয়ে চালান দেওয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে পুলিশকে টাকা দিলেও তারা আরও টাকা দাবি করে।
একপর্যায়ে পুলিশের এএসআই ইলিয়াস, সাথে থাকা অন্য পুলিশ সদস্য ও পুলিশ সোর্স তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের মেয়ে মিথিলা আক্তার জানান, বিকেলে সোনারগাঁও থানাধীন তালতলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক ইলিয়াস আহমেদ এক কনস্টেবলকে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন৷ দুজনেই সাদা পোশাকে ছিলেন৷ তারা এক লাখ টাকা দাবি করেন তার বাবার কাছে, না দিলে ওই এএসআই তাকে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।
'আমরা ৫০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়েছিলাম, কিন্তু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এএসআই ইলিয়াস আমার বাবাকে হাতকড়া পরিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমার বাবা বাঁধা দিলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। এরপর তারা আমার বাবাকে কিলঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে চলে যায়।'
মিথিলা আরও বলেন, 'আমার বাবা ইনহেলার ও পানি চেয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশ তা নিতে দেয়নি। আমার বাবা যদি ইনহেলার নিতে পারতেন তাহলে তিনি মারা যেতেন না।'
আহত নুরুল ইসলামকে পরিবারের সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুল আলম জানান, জামপুর এলাকায় নুর ইসলাম নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরার জন্য তার বাসায় অভিযান চালায় তালতলা এএসআই ইলিয়াস, কনষ্টেবল কালামসহ ৩ জন যায় এবং তাকে আটক করে। পরবর্তীতে আসামি অসুস্থ জানতে পেরে তাকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশ চলে যায়। এরপর ওই আসামির মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা ওই বাড়িতে গেলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোকজন পুলিশকে জড়িয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে। পরে আমি সার্কেল এএসপি সহ পরিবারের সদস্যদের বলি, আপনারা যেটা ভালো মনে করবেন সেটাই করা হবে বলে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।