নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

০৩ মে ২০২৪

কুতুবপুরের চিতাশালে মাদক ও জুয়ার রাজত্ব, নিয়ন্ত্রণে ৫০ কারবারী 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:১৬:২৫, ১৮ মার্চ ২০২৪

কুতুবপুরের চিতাশালে মাদক ও জুয়ার রাজত্ব, নিয়ন্ত্রণে ৫০ কারবারী 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার 'ক্রাইম জোন' খ্যাত কুতুবপুর ইউনিয়নে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে চিহ্নিত জুয়াড়ি ও মাদক কারবারিরা। ইউনিয়টির বেশ কয়েকটি স্পটে অবাধে জুয়ার আসর ও মাদকের আস্তানা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। প্রশাসনের একাধিক অভিযানের পরেও বিধ্বংসী এই দুই সমস্যা থেকে নিস্তার মিলছে না এলাকাবাসীর। এতে করে একদিকে জুয়ার ফাঁদে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ অনেকেই, অন্যদিকে মাদকের ভয়াল থাবায় বিনষ্ট হচ্ছে তরুণ-যুবকদের প্রাণ। প্রভাবশালীদের শেল্টার থাকায় বীরদর্পে জুয়া ও মাদকের রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে প্রায় ৫০ জনের একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেট।


সরেজমিনে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, কুতুবপুরের অন্যতম বড় জুয়া ও মাদকের হাট বসে পাগলার চিতাশাল এলাকায়। চিহ্নিত জুয়াড়ি ও মাদক কারবারি মুসলিমপাড়ার মালেক, খবির, কুসুমবাগের পাইক্কা খোকন, চিতাশালের মরা মোহন, খালপাড়ের বাবু, ভোটকা রতন, ইসলাম, খোকা, চিতাশালের আজিজ বাবুর্চিসহ অর্ধ শতাধিকের একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে জুয়া ও মাদকের এই রাজত্ব। এলাকার অন্যতম বড় জুয়া ও মাদকের আস্তানা চিতাশালের আল্লাহর দান কমিউনিটি সেন্টার ও চিতাশাল মন্দির-শ্মশান। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মন্দির ও শ্মশানকেই মাদক ডেলিভারির নিরাপদ স্থানে পরিণত করেছে তারা। দিনেও প্রকাশ্যেই সেখান থেকে মাদক সরবরাহের পাশাপাশি সেবনও চলে। রাতে মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বাড়ে আরো। 

পাশাপাশি আজিজ বাবুর্চির কমিউনিটি সেন্টারে রাতভর চলে লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়া ও মাদকের আসর। চিহ্নিত জুয়াড়ি ও মাদক কারবারি মুসলিমপাড়ার মালেক, খবির, কুসুমবাগের পাইক্কা খোকন, চিতাশালের মরা মোহন, খালপাড়ের বাবু, ভোটকা রতন, ইসলাম, খোকা, চিতাশালের আজিজ বাবুর্চিসহ প্রায় ৫০ জনের একটি দল রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সেখানে মেতে ওঠে কাইট জুয়া ও মাদক সেবনে। সেন্টারের প্রধান গেইট বন্ধ করে সরু গলিতে থাকা গোপন দুই গেইট দিয়ে যাতায়াত করে তারা। এই জুয়া ও মাদকের ফাঁদে পড়ে এরই মধ্যে নিঃস্ব হয়ে গেছে চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বহু পরিবার। দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে আসরের চারপাশে নিজেদের লোক রাখা হয়। চক্রের সদস্যরা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেলেই গোপন দুই গেইট দিয়ে পালিয়ে যায়। 

মাদক ও জুয়ার এই আস্তানা এলাকায় ওপেন সিক্রেট হলেও জনসাধারণ অজানা আতঙ্কে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে ভয় পায়। অবিলম্বে জুয়া ও মাদকের এই আসর চিরতরে বন্ধ করে চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি সচেতন এলাকাবাসীর। 


যদিও এ বিষয়ে পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে জানানো হয়, মাদক-জুয়াড়িসহ কোন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। কিন্তু বাস্তবে এর সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। মাদক, জুয়াড়িসহ নানা অপরাধে জড়িতদের দাপটে তটস্থ থাকে নিরিহ মানুষ।  এলাকার সাধারণ মানুষ জেলা পুলিশ প্রশাসন ও র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিন (র‌্যাব) এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সম্পর্কিত বিষয়: