
রূপগঞ্জের অস্ত্রধারী দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী রুবেল ভুইয়া (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১’র একটি আভিযানিক দল। এদিকে তার বিরুদ্ধে আদালতের বিচারকের সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে একটি ভুয়া আদেশনামা ও গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ফেরত তৈরী করে রূপগঞ্জ থানায় দাখিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত জানান, পরোয়ানা ফেরতটি আদালতে পাঠানো হয়েছে। যাচাইবাচাই শেষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এরআগে রবিবার দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সদস্যরা। পরে তাকে রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক আইনের মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে দেড় ডজনেরও অধিক মামলা রয়েছে। রূপগঞ্জ থানার একটি মামলায় দুই রিমান্ডের আবেদন করে দুপুরে তাকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আদালতের সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ফেরত এর বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাউয়ুম খান বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও বিভিন্ন অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, তারাবো দক্ষিন পাড়া এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল ভুইয়া (৩৫) দুর্ধর্শ অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী। এমন কোনো অপরাধ কর্মকান্ড নেই যে তার দ্বারা সংগঠিত না হয়েছে। র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে একাধিক বার। অস্ত্র ও মাদক কেনাবেচা, ভুমিদস্যু, চাদাঁবাজি লুটতরাজে পারদর্শী সে।
রুবেল ভুইয়া তারাবোর টাটকি এলাকায় ২০১২ সালে সংগঠিত আলোচিত ফয়সাল হত্যা মামলার প্রধান আসামি। তার রয়েছে একটি বিশাল মাদকের সিন্ডিকেট এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- তারাব সুলতান মাদানী মসজিদ এলকায় রুবেলের শালা নুর আলমের মাদকের স্পট, নিশান জুট মিলের সামনের মাদকের স্পট, তারাবো হ্যান্ডকাফ মনিরের বাড়ির সামনে জায়েদ আলী এরশাদের মাদকের স্পট।
স্থানীয়রা জানান, রুবেল ভুইয়া ও তার বাহিনীর অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকান্ডে এলাকাটি সন্ত্রাসী ও অপরাধের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। এদের অবাধ বিচরণ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে প্রত্যেককে অজানা এক ভয়ের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করতে হয়। গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঠিক মতন বেতন নিয়ে বাসায় ফিরতে পারে না। একসাথে ছেলে-মেয়ে এমনকি ভাই-বোনও একসাথে রাস্তা দিয়ে চলতে পারে না।
এদের পালিত সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের দৃস্টি গোচর হলে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মারধর করে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সাথে থাকা অর্থকড়ি, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী। নির্জনে নিয়ে খারাপ অপবাদ দিয়ে টাকা দাবী করা হয়।
মাদকের টাকা জোগাড় করতে এরা অনেক নিরীহ মানুষের পকেটে মাদক দিয়ে নির্যাতন করে এবং পরবর্তীতে গ্রামের আত্নীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশ যোগে টাকা নিয়ে আসে। এলাকায় জমি বেচাকেনা, কলকারখানা গড়ে তুলতে হলে তাদেরকে খাওয়াতে হয় মিষ্টি, দিতে হয় বখড়া। ছিনতাই, মারামারি, চুরি ডাকাতি যেন নিত্যকর্ম তাদের।
নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় একধিক বাসিন্দা জানান, রুবেল ভুইয়া ও তার বাহিনীর ৫ আগষ্ট গণঅভুথ্যানে হাসিনা সরকারের পতনের পর বিভিন্ন কারখানাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটতরাজ করেছে। ভুক্তভোগীরা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ভয়ে কারো কাছে কোনো অভিযোগও করেননি।
এরা চিহ্নিত দাগি অপরাধি, অপ্রতিরোধ্য সন্ত্রাসী। সুষ্ঠ তদন্ত করলে এদের সব অপকর্মের সত্যতা মিলবে।
তাই সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃংখলাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে স্থানীয়দের দাবি রুবেল বাহিনীর অন্য সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সব্বোর্চ শাস্তির নিশ্চিত করে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হউক যাতে আর কেউ আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার সাহস না পায়।