
রূপগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে ছাড়াতে গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন এক ছাত্রদল নেতা। ওই গুলিতে মামুন ভূঁইয়া নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। নিহত মামুন রূপগঞ্জের ভুলতা মাঝিপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি এলপিজি গ্যাসের ব্যবসা করতেন।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম জাহিদুল ইসলাম বাবু। তিনি জেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক। এছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
গুলি ছড়ার ঘটনায় ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বাবুকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। বুধবার (১১ জুন) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাবুকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বিষয়টি অনুমোদন করেন। এছাড়া ছাত্রদলের সব নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জাহিদুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকাকে মাঝিপাড়া এলাকায় দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এদিকে তাকে আটকে রাখার খবর পেয়ে দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বাবু। এসময় তিনি খোকাকে ছাড়িয়ে নিতে জনতার দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন।
এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মামুন ভূঁইয়া। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গাঢাকা দেন। পরে গতকাল বিকেলে তাকে এলাকায় দেখা গেলে ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদলসহ এলাকাবাসী তাকে আটক করেন। এ খবর পেয়ে ছাত্রদল নেতা বাবু তাকে ছাড়িয়ে নিতে পিস্তল দিয়ে গুলিবর্ষণ করেন। এতে গুলিবিদ্ধ হন মামুন।
ওসি আরও বলেন, মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে গুলিবর্ষণের পর এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে পালিয়ে যান ছাত্রদল নেতা বাবু। এরপর উত্তেজিত জনতা ছাত্রলীগ নেতা খোকাকে গণপিটুনি দিয়ে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করেন।
ওদিকে রাতেই নিহতের বড় ভাই বাদল ১৬ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন।