
সোনারগাঁয়ে পৃথক দুটি স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে প্রতিপক্ষের লোকজন। সংঘর্ষের উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন। গত রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামে ও গত সোমবার সন্ধ্যায় বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের মামরকপুর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধে পৃথক দুটি ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে গুরুত্ব অবস্থায় ৬ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথকভাবে থানায় তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দী গ্রামের বাসিন্দা ও ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা ইউনুস মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল।
এ বিরোধের জের ধরে গত রোববার রাতে ইকবালের নেতৃত্বে জামাল হোসেন, কামাল হোসেন, জুয়েল রানা, মুসা মিয়া ও রূপ মিয়াসহ ১০-১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র দা, চাপাতি, ছোড়া, হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদল নেতা ইউনুসের বাড়িতে হামলা চালায়।
এসময় হামলাকারীরা ইউনূস মিয়ার চাচাতো ভাই মো. মঞ্জুর ভূঁইয়াকে কুপিয়ে পায়ের রগ করে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আহতের চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা মো. ইউনুস মিয়া বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেনে।
ছাত্রদল নেতা ইউনুস মিয়া জানান, পূর্ব শত্রুতা ও জমি সংক্রান্ত বিরোধে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে ডান পায়ের রগ কেটে দেয়। এক পর্যায়ে ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে। পরে ঘরে থাকা স্বর্ণলংকার, নগদ টাকা, টিভি ফ্রিজ লুট করে নিয়ে যায়। এমনকি কোরবানীর মাংস লুট করে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মো. ইকবাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের মামরকপুর গ্রামে আব্দুর কাদিরের সাথে একই গ্রামে তোফাজ্জল হোসেনের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধে জের ধরে গত সোমবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে দু’পক্ষের লোকজনই লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, এসএস পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে।
উভয়পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষের খোরশেদ আলম, মোশারফ হোসেন, মো. সানাউল্লাহ, জানে আলম, তোফাজ্জল হোসেন ও মোসা: কুহিনুর এবং আব্দুর কাদিরের পক্ষের জুয়েল, নুরুল হক, হাজী সেলিম, সৈকত মোল্লা, মোসা: খুকি বেগম ও শারমিন আহত হন।
এদের মধ্যে তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষের খোরশেদ আলম, মোশারফ হোসেন, মো. সানাউল্লাহ, জানে আলম, তোফাজ্জল হোসেনকে গুরুত্বর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাকি আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর, নগদ টাকা ও স্বর্ণ লংকার লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আব্দুল কাদিরের পক্ষে মো. ফাহমিদ তুহিন ও তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে মো. রনি বাদি হয়ে গত মঙ্গলবার সোনারগাঁ থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিফুর রহমান জানান, পৃথক দুটি স্থানের হামলা ভাংচুরের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।