নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

মঙ্গলবার,

০৮ জুলাই ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে কোরবানীর চাহিদার তুলনায় পশু ঘাটতি ১২ হাজার ৮২৬টি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২০:২৮, ২৩ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে কোরবানীর চাহিদার তুলনায় পশু ঘাটতি ১২ হাজার ৮২৬টি

ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের খামারিরা গরু হৃষ্টপুষ্ট ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে, দেশীয় খাবার খাইয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে কোরবানিযোগ্য গরু।  

দেশি জাতের গরুর পাশাপাশি সিন্ধি, শাহিওয়াল, ব্রাম্মা, বুট্টিসহ নানা জাতের বিদেশি গরু, ছাগল ও মহিষ বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। 

জেলার পাঁচটি উপজেলার ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে চার হাজার খামার গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত। ইতিমধ্যে অনেক খামারে পশু বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ৯৯ হাজার ২৫২ টি। এদিকে, এই মুহূর্তে জেলায় কোরবানির জন্য ৮৬ হাজার ৪২৬টি গরু প্রস্তুত রয়েছে।

এ পশু গুলোর মধ্যে রয়েছে ষাড় ৪৮ হাজার ২৭৩টি, বলদ ৬ হাজার ৪৬৫ টি, মহিষ ৯১০টি, ছাগল ১০ হাজার ৪৪০ টি, ভেড়া ৩৩৮৪ টি, অন্যান্য পশু ১৬১টি। 

চাহিদার তুলনায় ১২ হাজার ৮২৬ টি পশুর ঘাটতি আছে। তবে আগামী কয়েকদিনে ঘাটতির পরিমাণ কমে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাণীসম্পদ বিভাগ। 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শে ১০টি গরু মোটা-তাজা করেছেন সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের খামারি হানিফ মিয়া।

তিনি বলেন, “রাসায়নিক ঔষধ ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করেছি। ভারত অথবা অন্য দেশ থেকে পশু না আসলে কোরবানির হাটে হয়তো ভালো দাম পাবো। প্রতিদিন মানুষ গরু দেখতে আসতাছে।”

সিদ্ধিরগঞ্জের খামারী আব্দুস সামাদ বলেন, আমার খামারে সংকর জাতীয় গরু গুলো দেখতেও সুন্দর,  এগুলোর দামও বেশি আড়াই লাখ টাকা থেকে বারো লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে আমার ফার্মে। এসব গুলো দেখতে ক্রেতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষও ভীড় করছেন প্রতিদিন। 

প্রাণীসম্পদ বিভাগ জানায়, খামারে মোটাতাজা গরুর কদর থাকলেও ছোট গরুর চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। লক্ষ্যপূরণ করা গেলে নারায়ণগঞ্জে এ বছর সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবে বলে আশা করছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

জেলা  প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মান্নান মিয়া  বলেন, সারা বছর গরু ও অন্যান্য পশু কিভাবে পালন করা হবে,  এ নিয়ে খামারিদের বিশেষ  প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

গরু মোটাতাজাকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রাকৃতিক নিয়মে গরু মোটাতাজা করছে এ জেলার খামারিরা। খামারিরা খড়, গম ও ডালের ভূষি, ঘাস, খৈইল, কুড়া খাইয়ে পশু পালন করেছে ।  

পাম ট্যাবলেট, স্টেরয়েড ও ডেক্সামেথাসন পশু ও মানুষের জন্য কতটা ক্ষতির সম্পর্কে এ বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে যেন তারা এসব ব্যবহার না করেন বিষাক্ত এসব রাসায়নিকের হাই ডোজ প্রয়োগ করে অল্পদিনে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তাজা করা এসব গরুর মাংস খেলে লিভার, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্তসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে। কেউ ব্যবহার করলে আইন অনুযায়ী দন্ডিত করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। 

তিনি আরও  বলেন, জেলায় চাহিদার তুলনায় ঘাটতি পশুর সংখ্যা কিন্তু আগামী কয়েকদিনে আরো কমতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। কিন্তু ঢাকার কাছাকাছি জেলা হওয়ায় অধিক লাভের আশায় সিরাজগঞ্জ পাবনা ও উত্তরাঞ্চল থেকে প্রতি বছরের ন্যায় গরু আসায় এই জেলায় পশুর ঘাটতি থাকে না। 

এছাড়া বাজার স্থিতিশীল থাকলে আশাকরি খামারিরা লাভবান হবেন। চামড়ার মূল্য সঠিক পাওয়া গেলে খামারিরা আরো বেশি লাভবান হবে।