
পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র- ছাত্রীদের নিকট থেকে টিকা প্রদানে ৫০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও স্কুলটির এডক কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে এ টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে অভিভাবক মহল থেকে।
তবে অভিযুক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক বজেন্দ্র নাথ সরকার ও পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. রেজাউল করিম তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
গত দুদিন পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাহের মোল্লা নামক একটি আইডি থেকে পোস্ট করা হয় পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকা প্রদানে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে স্কুল কর্র্তৃপক্ষ ৫০ টাকা করে দাবী করছে। সোমবার ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে টিকা দান শুরু করলেও সাংবাদিক স্কুলে গেলে টনক নড়ে উঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের।
তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ দ্রুত আদায়কৃত টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ফিরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার সকালেও টিকা প্রদানের নামে পুনরায় ৫০ টাকা করে আদায় করেছে এমনটাই অভিযোগ অভিভাবক মহলের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল পড়ুয়া একাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা জানায়, মঙ্গলবার সকালে টিকা দানের কথা বলে ৫০ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অস্টম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীর মা জানায়, সোমবার দিন টাকা নেয়া হয়েছিলো। কিন্ত সাংবাদিক উপস্থিত টের পেয়ে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অপরদিকে সপ্তম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর অভিভাবক জানায়, তার মেয়ে সপ্তম শ্রেনীতে পড়ে।মঙ্গলবার দিন টিকা প্রদানের কথা বলে স্কুল শিক্ষিকা চম্পা শ্রেনী কক্ষের প্রতিটি ছাত্রীদের নিকট থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করে।
এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে একাধিক জনের নিকট থেকে। অভিভাবকদের দাবী স্কুলটির এডক কমিটির সদস্য রেজাউল করিম গত দুদিন পূর্বে শ্রেনী কক্ষগুলোতে গিয়ে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলে আসে যে,নারায়নগঞ্জের কোন স্কুলে গিয়ে টিকা দিয়ে আসলে যাতায়াত বাবদ দেড় থেকে দুুইশত টাকা ব্যয় হতো।
আর তাই নিজেদের স্কুলে টিকা প্রদানের কেন্দ্র করায় সেই টাকা আর ব্যয় হচ্ছেনা। এ কাজ করতে টাকা ব্যয় হয়েছে। তাই টিকা প্রদানে সকলকে ৫০ টাকা করে দিতে হবে।
পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য ও প্রাইমারী স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়া জাহের মোল্লা জানান, টিকা প্রদানে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে ৫০ টাকা করে দাবী করার বিষয়টি তাকে গত দুদিন পূর্বে বহু সংখ্যক অভিভাবক জানিয়েছেন। তা তিনি উল্লেখ্য করে নিজ ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দেন।
তিনি বলেন টিকার কথা বলে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে ৫০ টাকা করে নিয়েছেন এরকম বহু প্রমান তার নিকট রয়েছে। সোমবার স্কুলটিতে সাংবাদিক গেলে তা টের পেয়ে অতি দ্রুত তা আবার শ্রেনী কক্ষেই ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযোগের তীর যার দিকে স্কুলটির এডক কমিটির সদস্য রেজাউল জানান, কারো নিকট থেকে কোন টাকা নেয়া হয়নি। চম্পা নামক এক স্কুল শিক্ষিকা একটি শ্রেনী কক্ষ থেকে ৫০ টাকা করে নিয়েছে। তবে তা টিকার জন্য নয়। স্কুলের ডায়েরীর জন্য নিয়েছে। বিষয়টি জানার পর তিনি এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক উভয়েই শ্রেনী শিক্ষিকা চম্পা ম্যাডাম কে শাসিয়েছেন বলে দাবী করেন।
তিনি আরো বলেন স্কুলটির ভাল যারা চায়না তারাই তার বিরুদ্ধে এবং স্কুলের বিরুদ্ধে এসকল গুজব মিথ্যা প্রগান্ডা ছড়াচ্ছে। কমিটিতি আসতে না পারা অনেকেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারনা করছে।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক বজেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, তিনি শুনেছেন স্কুলের কোন এক স্কুল শিক্ষিকা ছাত্রীদের নিকট থেকে ৫০ টাকা করে নিয়েছেন। তবে তা টিকার জন্য নয় স্কুল ডায়েরী প্রদানের কথা বলে টাকা নিয়েছেন।
তিনি স্কুলের বাইরে আছেন স্কুলে গিয়ে বিষয়টি তিনি জানবেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রতিবেদক কে স্কুলে এসে সরাসরি কথা বলে চা আপ্যায়ন করার আমন্ত্রন জানান।