ঈদুল আযহার অন্যতম অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। এরজন্য প্রয়োজন দা, চাপাতি, ছুরি, বটিসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম। এ জন্য প্রতি বছর এই ঈদকে কেন্দ্র করে কামার পাড়া টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি পুরোপুরি ভিন্ন। প্রতি বছর নগরের অলিগলিতে ছড়িয়ে থাকা কামারের দোকানে ক্রেতাদের সমাগম থাকলেও এবার নেই কাক্সিক্ষত সংখ্যক ক্রেতা।
শহরের বিভিন্ন বাজার বা কামারপাড়া ঘুরে দেখা যায়, আগুনে পুড়িয়ে গনগনে লাল লোহাকে হাতুরি পিটিয়ে নানা আকৃতি দিচ্ছে লৌহ শিল্পীরা। কালির বাজার, দিগু বাবুর বাজার, দেওভোগ, বাবুরাইল, বন্দর, ফতুল্লা বাজার, সিদ্ধিরগঞ্জ সহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন কামারের দোকানে দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, খুন্তি সহ একাধিক কোরবানিতে ব্যবহৃত লৌহজাত পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা । পণ্যের মূল্য কম ধরেই চেষ্টা করছেন পন্য বিক্রির, তারপরেও ক্রেতার দেখা নেই। দেখা যায়নি আগের মতো ব্যস্ততা। অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা।
ফতুল্লার পুলিশ লাইনস বৃহত্তর লোহার মার্কেট ও স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলো আগুনে পুড়ে দা, বটি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করেছেন কামাররা। সারি সারি ছুরি, চাকু, দা-বটি, চাপাতি বিছিয়ে রাখলেও ক্রেতার আনাগোনা না থাকায় এখন শঙ্কার ভাঁজ পড়েছে সারা বছর আগুনের উত্তাপ গায়ে জড়িয়ে লোহা পিটিয়ে সরেঞ্জামে পরিণত করা কারিগরদের কপালে।
ফতুল্লা বাজারের কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, পুরো বছরের যে পরিমাণ আয় হয়, তার চেয়ে বেশি আয় হয় এই ঈদে। ফলে এই আয়-উপার্জনের ওপরই তাদের অনেক আশা জড়িয়ে থাকে।
সিদ্ধিরগঞ্জের লৌহ কারিগর সামসুল হক বলেন, ‘করোনার কারণে বাজারে লোকজন তেমন নেই। অন্য বছরগুলোতে আমরা দিন-রাত কাজ করতাম। আর এখন বসেই আছি। বাজারে লোকজন তেমন আসতাছে না। পুরানো ছুরি, বটি, দা শান দিয়ে বসে আছি। ক্রেতা নেই।’
বন্দরের কামার অরুণ কুমার বলেন, প্রতিবছর এই সময়ে সবসময় ভালো বেঁচা-কেনা হলেও এ বছর বেচা কেনা নেই বললেই চলে। করোনার পর থেকে পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে দিন যাচ্ছে। কোনো সাহায্যও পাই নাই।