নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪

আমি কবির কাকা ও বিভার পক্ষে ভোট চাইতে আসি নাই : আইভী

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০৩:২৯, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

আমি কবির কাকা ও বিভার পক্ষে ভোট চাইতে আসি নাই : আইভী

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, আমি এখানে কোন নির্বাচনী জনসভায় আসি নাই। আমি কারো পক্ষে বিপক্ষে আসি নাই। আমি ভোট চাইতেও এখানে আসি নাই। আমি কাউন্সিলর কবির কাকার কথা বলতে এখানে আসি নাই। আমি বিভার পক্ষে ভোট চাইতে এখানে আসি নাই। 

 


শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাপ্পী চত্ত্বর এলাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷ এর আগে ওই এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সড়কের নামফলক উন্মোচন করেন তিনি।

 


আইভী বলেন, এই অঞ্চলের মুক্তি যোদ্ধারা সব সময় আমার পক্ষে ছিল। বিপদে আপদে তাদের পাশে পেয়েছি। ২০১১ সালে অনেক চোখ রাঙ্গানি  উপেক্ষা করে আমি আমার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছিলাম এই ১৮ নাম্বার ওয়ার্ড থেকে। তখন আপনারা আমার পাশে এসে দাড়িয়েছিলেন। আজ যে রাস্তাটি মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করলাম তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে।

 


তিনি বলেন,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতি সংঘে পুরস্কার পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। পদ্মা সেতু হতো না যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকতেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার নেত্রী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমি লালন করি, পালন করি। আমার পিতা আলী আহম্মদ চুনকা এই দল করেছেন। আমি আমৃত্যু এই দল করে যাবো। কিন্তু আমি যখন কাজ করবো দল মতের উধ্বে রেখে করবো। আমি নির্বাচনের আগে বলবো এখনও বলবো আমি আপনাদের সকল দলের মেয়র। আমার পরিচয় আমি শেখ হাসিনার কর্মী। 

 


বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ডা. আইভী বলেন, পাঁচটি সড়ক হতো না যদি আমি কাজ না করতাম। আমি এই বাপ্পির নামে রাস্তার নাম করণ করেছি। আমি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা চত্বর করে দিয়েছি। শীতলক্ষ্যা এলাকায় এই দু’পাশের খাল আমি খনন করেছি। এই কাজে কবির কাকা ও বিভা অনেক শ্রম দিয়েছে। তারা রাত দিন পরিশ্রম করেছে। এই খালকে আমি সৌন্দর্য বর্ধন করে দিবো আমি কথা দিয়ে গেলাম। আমি যদি নমিনেশন পাই এবং নির্বাচিত হই। এই ওয়ার্ডে একটি কমিউনিটি সেন্টার করে দিব। কাউন্সিলর অফিস করে দিব। ছোট একটি খাল রয়েছে এই খালের কাজও সম্পূর্ণ করে দিব। এছাড়াও আপনারা দেখেন আরো কোন কাজ আছে কিনা। কোন কাজ আর নাই।

 


আইভী বলেন, অনেকে বলে শহিদ নগরে ময়লা কেন আমি ফেলছি। এই ময়লা পাঁচ বছর যাবৎ ফেলা হচ্ছে। এতো দিন তো কেউ এ বিষয়ে কোন কথা বলেননি। এখন নির্বাচন আসছে এখন কেন এ ধরনের কথা বার্তা। যখন আমি কোথাও ময়লা ফেলতে পারছি না সেই সময়ে শহীদ নগরে এই জায়গাটি ডিসি সাহেব আমাকে দিয়েছেন। 

 


মেয়র বলেন, জালকুড়িতে আমি যখন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম তখন মানববন্ধন করেছিল একজন বিশিষ্ট নেতা। ওখানে ডাম্পিং এরিয়া করতে দেওয়া হবে না। আল্লাহর অশেষ রহমত মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ২৩ একর জমি একোয়ার করার জন্য প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। ওই জায়গা একোয়ার করেছি। শীতলক্ষ্যাবাসির কাছে আমার অনুরোধ আপনারা জালকুড়ি গিয়ে একটু ঘুরে আসবেন। ওইখানে পাঁচ মেগাওয়ার্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। সেটাও টেন্ডার হয়ে গেছে। আল্লাহ চাইলে শীগ্রই এটা প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। তার পাশেই আরেকটি স্পট করেছি জাইকার মাধ্যমে ময়লা আবর্জনার কাজ চলছে। 

 

 

আইভী বলেন, আমি পঞ্চবটিতে একটি পজেক্ট করেছি যেখানে প্লাষ্টিক থেকে তেল উৎপাদন করা হচ্ছে। আপনারা কি মনে করেন এই জায়গাটি এরকমই থাকবে জালকুড়ির মতো এই জায়গাটিতে আপনারা ঘুরতে আসবেন। কে কি করল কে মিথ্যা প্রচারণা করল আপনারা সেদিকে কান দিবেন না। আপনারা আঠারো বছর ধরে আমাকে দেখছেন, আমি কথায় এবং কাজে মিল রেখেছি। আমার উপর ভরসা রাখবেন যে অঞ্চলগুলোতে ময়লা ফেলা হচ্ছে সেগুলো আধুনিক সুব্যবস্থা করা হবে। আপনারা কারো কথা বিশ্বাস করবেন না। নির্বাচন আসছে অনেকেই অনেক কথা বলবে। আপনারা ধৈর্য ধারন করবেন। আপনার বিরুদ্ধে যে কেউ কেন্ডিডেট হতে পারবে এটা সকলের নাগরিক অধিকার। আপনি ভাল কাজ করলে অবশ্যই মানুষ আপনাকে ভোট দিবে। এখানে অনেক হিন্দু ভোটার আছেন, মসজিদ, মন্দির শ্বশান, গির্জা ও কবর স্থানের প্রচুর কাজ করেছি। আপনারা দেখেন ঘুরেন, সব দেখবেন। সরকার টাকা দিয়েছে বলেই কাজ করতে পেরেছি। জনগণ টেক্স দিয়েছে বলেই কাজ করতে পেরেছি। আশা করি আমি সকল ধর্মের জন্য সমান ভাবে কাজ করতে পারবো। 

 

 

মেয়র বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা আমার কাছে দাবী করেছিল প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধাদের স্তম্বের পাশে যেন একটা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে দেই। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি এ বছরে আমরা করতে পারি নাই। আমরা জায়গা খঁজে পেয়েছি ভবিষ্যতে ২৭টা ওয়ার্ডে টেন্ডারের মাধ্যমে স্তম্ভ করবো এবং মুক্তি যোদ্ধাদের নামের তালিকা করে দিবো। প্রত্যেকটি কবর স্থানে দশ শতাংশ করে মুক্তি যোদ্ধাদের কবরের জন্য আলাদা ভাবে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।  এটা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাদের কবরকে পাকা করে তাদের নাম লিখে দেওয়া, গেজেড নাম্বার লিখে দেওয়া, সেক্টরে যুদ্ধ করেছে সে সেক্টরগুলোর নাম লিখে দেওয়া। নতুন প্রজন্ম যাতে বলতে পারে এটা আমার দাদার কবর। জননেএী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি কাজ করছি। 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ আফসানা আফরোজ বিভা হাসান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসাইন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শরফুদ্দিন রবি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোসেন সিদ্দিকী প্রমুখ৷

সম্পর্কিত বিষয়: