সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার জামতলা এলাকায় একটি মাদ্রাসার হেফজখানার তিন ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগের পরপরই মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক। গত তিন মাস ধরে এ নির্যাতনের ঘটনা চলছে বলে অভিযোগ এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের।
বুধবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা মাদ্রাসায় ছুটে আসেন। তবে তার আগেই পালিয়ে যান অভিযুক্ত শিক্ষক শাহজালাল (৩৫)। তিনি জামতলা ধোপাপট্টি এলাকার দারুল ইসলাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসার হেফজখানার শিক্ষক।
ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রের মা বলেন, মাদ্রাসার হেফজখানার শিক্ষক শাহজালাল গত তিন মাস ধরে তার ছেলেকে বলাৎকার করছিল। কিন্তু তার ছেলে ভয়ে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। সবশেষ গত ৯ তারিখ মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে এসে এই বিষয়টি তাকে জানায়। পরে একই মাদ্রাসার আরও দুই ছাত্র সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করে।
ভুক্তভোগী আরেক ছাত্রের বাবা বলেন, আমি তো আমার ছেলেকে এখানে মানুষ হতে পাঠিয়েছি। এখন আমার ছেলে এই মাদ্রাসা থেকে নোংরা স্মৃতি নিয়ে গেল, এটা সারা জীবনেও সে ভুলবে না। আমি কখনো এমন চিন্তা কল্পনায়ও আনিনি। এই ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এক ছাত্রের অভিভাবক বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের ইসলামের সঠিক শিক্ষা দিতে এখানে পাঠিয়েছি। কিন্তু আমার ছেলের সহপাঠীদের সঙ্গে যা ঘটেছে, এরপর আমার ছেলেকে এখানে আর রাখব না। এই ঘটনা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যই হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
জানতে চাইলে দারুল ইসলাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসার হেফজখানার প্রধান আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা রাতে এক ঘরে ঘুমাই। আর ছাত্ররা অন্য ঘরে আলাদা আলাদা থাকে। এরই মধ্যে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল তা আমি জানি না। আর শাহজালাল নামে যেই হুজুরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে সে গতকাল রাতে পালিয়েছে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিজাউল হক দিপু বলেন, লিখিত কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। লোক মুখে জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। রোজার ঈদের সময় সেখানে ঘটনা ঘটেছে।
তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ ঘটনার শিকার দুই মাদ্রাসার ছাত্রের ঠিকানা পেয়ে সেখানে গিয়ে তাদের অভিভাবকদের কে থানায় আসার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।