নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজী টায়ার কারখানায় আগুন, ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:১৮:২৫, ২৭ আগস্ট ২০২৪

গাজী টায়ার কারখানায় আগুন, ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি

রূপগঞ্জের গাজী টায়ার্স কারখানায় আগুন দেয়ার ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানকে প্রধান করে ৮ সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। 


মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক।

 

তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটিতে গণপূর্ত বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিনিধি থাকবেন। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে। আমরা শুনেছি প্রচুর লোক এখানে এসে লুটপাট করেছে। আগুন দেয়ার ঘটনায় কারা জড়িত তাদের শনাক্ত করা হবে। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর আমরা দেখব কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ভেতরে কি পরিমাণ লোক ছিল। তবে কেউ আটকা পড়েছে কিনা, মারা গেছে কিনা এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই।’

 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘নিখোঁজের কোন সংখ্যা আমাদের কাছে নেই। আমরা বাইরে দেখেছি বেশ কিছু লোক বাইরে অপেক্ষা করছে। তাদের আত্মীয়, পরিবারের মানুষজন নিখোঁজ রয়েছে বলে যেটি তারা বলছে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। অগ্নিকাণ্ডের পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলে আমরা তদন্ত করে দেখব।’ 


গাজী টায়ারসহ প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কারখানায় লুটপাট ও আগুন দেয়ার ঘটনায় রূপগঞ্জ থানা জিডি করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গাজী গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান। দুপুরে কারখানা পরিদর্শনের এসে তিনি একথা জানান।

 

শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের গত মাসের বেতন দিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া এই মাসের বেতনসহ সকল পাওনা আগামী মাসের ৭ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে আমরা শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছি।’

 

হামলা, লুটপাট ও আগুন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে  তিনি বলেন, ‘এই গ্রামের আশপাশের লোকজন যারা রয়েছে তারা এই কাজগুলো করেছে। শত শত মানুষ দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একযোগে এসে এখানে লুটপাট করেছে এবং আগুন দিয়ে কারখানা জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমরা ফায়ার সার্ভিসকে জানিয়েছি। তাদের গাড়ি রাস্তায় আটকে দিয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীকেও জানিয়েছি। কিন্তু দেশের চলমান সংকটাপন্ন পরিস্থিতির কারণে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট আমরা পাইনি। তবে লুটপাট ও আগুন দেয়ার ঘটনায় আমরা জিডি করেছি। আমাদের আইনি একটা টিম আছে তারা বিষয়গুলো দেখভাল করছে’।

 

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে গাজী গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে এটা বলতে পারি প্রায় দশ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের প্রতিষ্ঠান একেবারে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।’

 

এদিকে গাজী টায়ার কারখানার অগ্নি নির্বাপণের কাজ মঙ্গলবারও চলমান রেখেছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। আগুন যাতে আর ছড়াতে না পারে সেই লক্ষ্যে গতকাল রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর থেকেই অগ্নি নির্বাপণের কাজ চলছে।

আরও পড়ুন:৩২ ঘন্টা পর নিভেছে গাজী টায়ারের আগুন, ভবন ধসের শঙ্কা,

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে পুরোদমে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ভবন থেকে এখনও আগুনের কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ধোঁয়ায় আশপাশের এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। তবে আগুনে ছয় তলা ভবনটি একেবারেই পুড়ে যাওয়ায় ইট, রড ও সিমেন্টের আস্তর খসে পড়ছে। ভবনটি ধ্বংস স্তূপে পরিণত হওয়ায় যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় আশপাশে কাউকে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত বিষয়: