নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

৩০ মে ২০২৫

প্রতিদিন দেড় থেকে দু’লাখ টাকার মাদক বিক্রি হয়ে থাকে

মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্য তারাবো ৮ নং ওয়ার্ড

প্রকাশিত:২০:৪৩, ২৯ মে ২০২৫

মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্য তারাবো ৮ নং ওয়ার্ড

মাদকের কালো ছায়ায় অন্ধকার রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড । এখানে  প্রায় অর্ধ্বশত মাদকের স্পট রয়েছে। এ সব স্পটকে ঘিরে ছোট-বড় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে।

এখানে সহজেই মিলছে মরণ নেশা গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, আইসপিল, টিডিজেসিক ও লুপিজেসিক ইঞ্জেকশনসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্য। সচেতন মহল বলছে পর্যাপ্ত নজরদারি ও তদারকির অভাবেই তারাবো পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডটি মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের ‘অভয়ারণ্য’।  

বিভিন্ন সমীক্ষালব্ধ তথ্য থেকে জানা যায়, ওই এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রন করছে একাধিক সিন্ডিকেট। এদের মধ্যে রাসেল, শ্রাবন ও রুবেল সিন্ডিকেটই মূলত ওই এলাকার অধিকাংশ মাদক স্পট নিয়ন্ত্রন করছে। এদের মাধ্যমে এখানে প্রতিদিন দেড় থেকে দু’লাখ টাকার মাদক বিক্রি হয়ে থাকে। 

মাদকের বিষাক্ত ছোবলে হাজার হাজার তরুণের জীবন বিপন্ন। মাদকের টাকা জোগাড় করতে তারা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও খুনসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। মাঝে মাঝে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও রাঘব-বোয়ালরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাসেল সিন্ডিকেটর প্রধান রাসেলের নিয়ন্ত্রনে নির্বিঘ্নে ৮নং ওয়ার্ডে মাদক স্পট চলছে। এদের মধ্যে তারই আপন ভায়রা তারাবো গ্রামের ইয়াসিনের ছেলে আবদুল্লাহ ও দক্ষিণপাড়ায় রাসেলের আপন বড় ভাই জুয়েল তারাবো ৮ নং ওয়াডে মাদক সাপ্লাই করে থাকে। 

তারাবো বাজারে সিএমবির ভিতরে মাদক স্পট চালায় কামাল উদ্দিনের ছেলে জাহেদ আলি, ওয়াকিলের ছেলে ফারুক, মৃত রসিদের ছেলে এরশাদ।  তারাবো অপূর্ব ডাইং সামনে রহিম বাদশা পিতা মৃত শুকুর আলী বিপুল পিতা রহম আলী বাদল ওরফে তোতলা বাদল। 

তারাবো সিএমবি বালুর মাঠ নদীর পাড় আকবরের বালুর গদির সামনে মাদক স্পট চালায় মতিন সাউথের ছেলে চান্দু, আব্দুর রহমানের ছেলে আবুল, মোশারফের ছেলে শাহিন। 

তারাবো বউ বাজারের সামনে স্পট চালায় মৃত লাল মিয়ায় ছেলে রিপন। তারাবো গাবর পাড়ায় স্পট চালায় আনোয়ারের ছেলে নাঈম, বারেকের ছেলে আলামিন ওরফে চাপাটি আলামিন, ফজর আলির রাজু।  

নিসান জুট মিলের সামনে স্পট চালায় জাকিরর ছেলে মেহেদি ও ওগাতের ছেলে রবিন। তারাবো সোলতান বাগ নদির পাড়ে স্পট চালায় আলমগীরের বাপি, শামসুলের ছেলে মোবারক ও সেরাজুল। তারাবো নয়া বাড়িতে স্পট চালায় শাহজাহান উদ্দিনের ছেলে মালেক, মৃত মঞ্জুর ছেলে জসিম পাগলা ও হৃদয়ের ছেলে নিরব। 

তারাবো রিতার বিটায় স্পট চালায় দিলুর ছেলে রানা ও জসিম পাগলার ছেলে জাহিদ।  তারাবো হাটি পাড়ায় স্পট চালায় তোফাজ্জলের ছেলে নুরু ও নুর ইসলামের ছেলে উজ্জল। তারাবো হাটি পাড়ায় স্পট চালায় রতন সরকারের ছেলে দিগন্ত বাবু, ইন্নাত আলীর ছেলে আরিফ।

রাসেল সিন্ডিকেটের প্রত্যেকটি স্পট দেখভাল করে রুবেল ভুইয়া। এছাড়াও রাসেলের আপন বড় ভাই সুলতান বাগ নয়াবাড়ি স্পটটি কন্ট্রোল করে। রাসেলের আপন বিয়াই আনোয়ার এসব স্পটের ইয়াবা ফেনসিডিল গাজা মদ বিয়ার সাপ্লাই করে।

তারাবো দক্ষিণপাড়া থেকে আব্দুলার বাড়িতে রাসেলের বড় ভাই জুয়েল প্রতিদির সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ডেলিভারি দেয়। এছাড়া তারাবো হাটিপাড়া হিন্দু পাড়ার প্রত্যেকদিন জুয়ার স্পট বসায়।  এই স্পট থেকে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা বখড়া পায় রুবেল রাসেল শ্রাবণ।

আরও একটি জুয়ার স্পট বসায় তারাবো সি এম বি নদীর পাড় আকবরের বালুর গদির সামনে। সেখান থেকেও প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকা বখড়া পায় রাসেল, রুবেল ও শ্রাবণ। 

স্থানীয়দের দাবি যদি ৮ নং ওয়ার্ডের এসব মাদক স্পট বন্ধ না করা হলে এ এলাকা বসবাসের অয়োগ্য হয়ে পড়বে। মাদক সেবী আর মাদক ব্যবসায়ীদের বিচরণে সাধারণ  মানুষ প্রতিটা মুহুর্তে আতংকে থাকছে। দ্রুত এদের প্রতিহত করতে হবে।

বিশেষ করে অপ্রতিরোধ্য রাসেলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে তারা সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।  

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত চলে। রূপগঞ্জের অনেক এলাকা দুর্গম। এ সব এলাকায় যেতে অনেক সময় লাগে।

এ সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। তবে মাদকের সাথে কোনো আপষ নেই। এদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।