নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪

রুট পারমিট এক রুটে চলছে আরেক রুটে, নেই কাউন্টার 

নারায়ণগঞ্জে মৌমিতার আস্ফালন, রুখবে কে?

নুসরাত জাহান সুপ্তি

প্রকাশিত:০০:১৩, ১৯ জুলাই ২০২২

নারায়ণগঞ্জে মৌমিতার আস্ফালন, রুখবে কে?

নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলাচল করে মৌমিতা ট্রান্সপোটের বাস। কিন্তু বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদনের অতিরিক্ত বাস যেমন চলছে তেমনি নেই তাদের কাউন্টারের অস্তিত্ব নেই। বরং শহরের একাধিক স্থানে রয়েছে মৌমিতা ট্রান্সপোটের অবৈধ স্টান্ড। বিশেষ করে চাষাঢ়ার শহিদ মিনার এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে এই বাসের আস্ফালন চলছে। সড়কের উপর বানিয়েছে অবৈধ স্টান্ড। 


এদিকে ট্রাফিক পুলিশের সামনেই চলন্ত বাসে যাত্রী উঠা নামা করানো হচ্ছে। চলন্ত বাসে যাত্রী উঠানোর তাড়াহুড়োয় প্রায়শই ঘটছে দূর্ঘটনা। ফলে ঝুঁকি নিয়েই এই রুটের মানুষ বাসে ওঠানামা করে।  


ওদিকে যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন কারণে একাধিকবার এই বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও আশানুরূপ কাজ হয়নি বলে জানান ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মোহাম্মদ করিম। 


সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনারের নিকটবর্তী শান্তনা মার্কেটের সামনে ৪টি মৌমিতা বাস সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছে যাত্রীর অপেক্ষায়। প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর পর একটি নতুন বাস দাড়িয়ে যাত্রী উঠাচ্ছে। সড়কের একদিকের দুই লেনের মধ্যে এক লেন অবৈধ স্টান্ডের দখলে পড়েছে। যার ফলে অতিরিক্ত যানবাহন একলেনে থাকায় হচ্ছে বাড়তি যানযট। শহরে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের বিপরীতে  প্রতিদিনের এই যানযট চিত্র তৈরী হলেও এই সমস্যার কোন স্থায়ী সমাধান নেই। বরং চাষাড়া মোড় থেকে বায়তুল আমান ভবনের সামনে চলন্ত গাড়িতেই উঠায় যাত্রী। যাত্রী উঠানোর ধস্তাধস্তিতে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। 


 
জানা যায়, গত ১৯ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে মৌমিতা ও বাঁধন পরিবহনের যাত্রী উঠানো নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। ওই সময়ে দু’টি বাসের মাঝখানে চাপা পড়ে ফারুক নামে একজন রিকশাচালক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। 


  
বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ বিভাগের সূত্রমতে, বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদনকৃত মৌমিতা ট্রান্সপোর্টের বাস রয়েছে ৯৩টি। কিন্তু এই রুটে মৌমিতা ট্রান্সপোর্টের বাস চলছে কয়েক শতাধিক। মৌমিতা ট্রান্সপোর্টের বাসের রুট পারমিট অনুযায়ী বাসটি ২নং রেলগেট থেকে বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে প্রবেশ করবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে। কিন্তু নিয়ম না মেনে নবাব সলিমুল্লাহ সড়কে শতাধিক বাসের একটি স্টান্ডে বানিয়ে সেখান থেকে যাত্রী উঠানো হয়। বাসটি নবাব সলিমুল্লাহ সড়ক থেকে গোল চত্তর ঘুরে ঢাকার রুটে প্রবেশ করে। 


 
ভুক্তভোগী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মনিরুজ্জামান বলেন,  আজিমপুর থেকে নারায়ণগঞ্জে এসে চাকরি করি। মৌমিতা বাস গুলো দিয়ে গেলে ওরা চলন্ত বাসে গরু ছাগলের মতো মানুষ উঠায়। তাড়াতাড়ি উঠতে গিয়ে এক দিন মারাত্মক ব্যাথা পাইছি। এটা ডিরেক্ট আজিমপুর নিয়ে নামায়।  এ কারণে এটাতেই উঠি কিন্তু অন্যান্য বাসের মতো স্ট্যান্ডে থামাইলে মানুষের উপকার হইতো। এখন যেভাবে বাসে উঠায় এটা তো কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে না। কিছুদিন আগে আমার সামনে অল্প বয়সী একটা মেয়ে বাসে উঠতে গিয়ে পড়ে গেছে। অল্পের জন্য সিরিয়াস দুর্ঘটনা হয়নি। 


  
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মোহাম্মদ করিম এ বিষয়ে বলেন, আমরা তো চাইলেই একটা বাস উঠিয়ে দিতে পারি না। আমরা একাধিকবার মৌমিতা বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। এ কারণে পূর্বের তুলনায় মৌমিতা বাস সংক্রান্ত সমস্যাগুলো কিছুটা কমেছে। আমরা এই বিষয়টা নিয়ে একাধিক মিটিং করেছি। শীগ্রই এই সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


 
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) নারায়ণগঞ্জ বিভাগের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ সামসুল কবির এই বিষয়ে বলেন, মৌমিতা ট্রান্সপোটের ৯৩টি বাসকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাহিরেও এই কোম্পানির বাস চলে। আমরা শীগ্রই ফিটনেস বিহীন, ও লাইসেন্স বিহীন পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তখন এসব পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  এছাড়াও অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং নিরসনে আমরা নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করি। 

সম্পর্কিত বিষয়: