ঋণনির্ভর, ধনীতোষণের বাজেট প্রত্যাখ্যান ও স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকাল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাসদ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিমল কান্তি দাস, বাসদ জেলা ফোরামের সদস্য সেলিম মাহমুদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলার সভাপতি মাহমুদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, আবু নাঈম খান বিপ্লব, আবু হাসান টিপু, অঞ্জন দাস।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকার ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে। এটা শুধু বড় বাজেট নয়, সবচেয়ে বেশি ঘাটতি বাজেট। জনগণের উপর করের বোঝা চাপালেও কর্পোরেট টেক্স ২.৫ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, এটি ব্যবসা বান্ধব বাজেট। তবে ব্যবসা বান্ধব হলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ভাল কিছু করেননি। প্রতিবারের মতো এবারও সুদ পরিশোধ বাবদ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হযেছে।
১৯৭২ সালের তুলনায় বর্তমান বাজেট ৭৬৮ গুন বড় হলেও কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তত বড় নয়। অনুৎপাদনশীল খাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ২০০৬ কোটি টাকা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৩৭৭৫ কোটি বাড়ানো হয়েছে। করোনার এত বড় ধাক্কার পরও চিকিৎসা ক্ষেত্রে জিডিপির মাত্র ০.৯৫ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে।
৪২ শতাংশ শ্রমজীবীর কর্মসংস্থান করছে যে কৃষি খাত তাতে ভর্তুকি বাড়েনি। সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থী এবং ২০ লাখের বেশি শিক্ষক করোনাকালে বিপর্যস্ত। এদের জন্য শিক্ষা সহায়তা এবং দুর্যোগ ভাতাতো নেই, বরঞ্চ বেসরকারি কলেজ বিশ^বিদ্যালয়ে ১৫% ভ্যাট ধার্য করেছে ও গতবারের তুলনায় এবার বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দও কম।
সংস্কৃতি খাতে বাজেটের মাত্র ০.০৯৭%, যা সংস্কৃতিজনদের ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। করোনাকালে নতুন করে দরিদ্র হওয়া আড়াই কোটি মানুষ, ৬ লক্ষ দেশে আসা প্রবাসী শ্রমিক ও প্রতি বছর শ্রমের বাজারে আসা ২২ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। বাজেটের ২৬.৭% খরচ হবে জনপ্রশাসন খাতে।
গত এক দশকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবত বরাদ্দ ২১১% বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অর্জন ৭২ এর সংবিধানে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতকে প্রধান করা হয়েছিল, অথচ অর্থমন্ত্রী ব্যাক্তি খাতকে ড্রাইভিং সিটে বসানোর কথা বলে সংবিধান লংঘন করেছেন। নেতৃবৃন্দ ধনী তোষণের এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।