
“৩৩ বছর কেটে গেল, কেউ কথা রাখেনি”এমন করুণ আর্তিতে নিজের মনের ক্ষোভ ও বঞ্চনার কথা প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বি. আর. বিলকিস।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি নিজের জীবনের সংগ্রাম, অবহেলা আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা তুলে ধরেন।
তিনি লেখেন,“বেতন-ভাতা নিয়ে কখনো কিছু বলিনি, লিখিনি। কিন্তু আজ মনে হলো লিখি একটু। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় টাইমস্কেল প্রাপ্য ছিলাম। আজ ২০২৫ সাল এর মধ্যে কত কিছুই ঘটে গেল, কিন্তু আমি পাইনি।”
তিনি আরও বলেন,“দেশ একটা, মন্ত্রণালয় এক, অধিদপ্তর এক তবুও কেউ টাইমস্কেল পেলো, কেউ পেলো না। আমি বা আমার মতো অনেক কপাল পোড়া শিক্ষক এখনো অপেক্ষায়।
বিলকিস উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ছিল তাঁর জীবনের এক কালো দিন। দ্বিতীয় শ্রেণির সিল ব্যবহারের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এরপর থেকে তাঁদের জীবন যেন এক দীর্ঘ অপেক্ষা।“
এখন আমরা সবাই মিলে তৃতীয় শ্রেণির কামলা। ৪৫ জন বাদী হয়ে টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ভুলে গেছেন। তারা মর্যাদা চান, টাকার দরকার নেই। কিন্তু আমরা শুধু চেয়ে থাকি আকাশের দিকে।”
তিনি আরও লিখেছেন,“প্রধান শিক্ষকদের চেয়ার ক্ষয়ে যায়, ভেঙে পড়ে, কিন্তু পদোন্নতির অস্তিত্ব নেই। আমরা যেন একেকটা জড় পদার্থ। তারপরও আশার বাণী শুনিয়েছেন ডিজি স্যার বলেছেন প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতির কথা ভাবছেন।”
শেষে নিজের মানসিক অবস্থা প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, “জীবন যেন এক বোঝা হয়ে গেছে। দুঃখ এখন আমার শিক্ষকতার জীবনের অলংকার। আমি এক আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায় শিক্ষক।”
ফেসবুকে প্রকাশের পর থেকেই তাঁর এই পোস্টটি ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষকদের মধ্যে। অনেকেই একে “দেশের হাজারো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বাস্তব চিত্র” বলে মন্তব্য করেছেন।