নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা  না ফেলার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২০:৪৫, ১০ মার্চ ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা  না ফেলার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ

ফাইল ফটো

১৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে মহাসড়কের পাশ্বের সকল ধরনের ময়লা আবর্জনা অপসারন এবং ভষ্যিতে মহাসড়কের পাশ্বে কোন ধরনের ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য স্থায়ী  নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় হাসাপাতাল ও পারিজাত বানিজ্যিক ভবনের সামনে ময়লা আবজর্না নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের করা এক রিটের শুনানী শেষে এ রায় প্রধান করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম  ও বিচারপতি মো: আতাবুল্লাহ । ৭ মার্চ পুর্নাঙ্গ রায় প্রকাশ করে হাইকোর্ট। 


জানা গেছে, মহাসড়কের পাশে^ ময়লা আবর্জনা ফেলে দুর্ভোগ সৃষ্টি করার কারনে দুর্ভোগ নিরসনের জন্য জনস্বার্থে বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস সোসাইটির সদস্য মোঃ নুরুল আলম  পক্ষে অ্যাডভোকেট এম আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া এ রিট আবেদন করেন। 


রিটে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি, সচিব, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয় সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের  মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশেনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নারায়ণগঞ্জ জেলা বন বিভাগের প্রধানকর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।  


হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মহাসড়কে সব ধরনের অবৈধ ময়লা আবর্জনার স্তুপ বন্ধে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনানুগ কর্তৃত্ব ব্যতীত ঘোষণা করা হবে না এবং এর কোনো আইনগত প্রভাব নেই তার কারণ দর্শানোর আহ্বান জানিয়ে একটি বিধি নিষেধ জারি করা হোক। 


বিবাদীদের কাছে জবাব চাওয়া হয়, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা, নারায়ণগঞ্জের উল্লিখিত মহাসড়ক থেকে সমস্ত আবর্জনা/ল্যান্ডফিল অপসারণের নির্দেশ দেওয়া কেন উচিত নয়  তা চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। রায়ে বলা হয়,মহাসড়কের পাশে^ স্থায়ীভাবে ময়লা ফেলা বন্ধে আদালতে আদেশ প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে উল্লিখিত মহাসড়ক থেকে সমস্ত ল্যান্ডফিল অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবাদীদেও নিস্ক্রিয়তায়  আইন অনুযায়ী সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মহাসড়কের উপর অবৈধ ময়লা ফেলার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাদের সরকারী দায়িত্ব পালন করছে না। সওজের জমি দখলের জন্য ভূমিদস্যুদের অবৈধ ল্যান্ডফিলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিবাদীদেরকে সরকারী দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়। 


জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জে রাতের আধাঁরে মহাসড়ক দখল করে আবারও ফেলা হচ্ছে ময়লা এমন সংবাদ বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হলে রিটের মাধ্যমে হাইকোর্টর নজর নিয়ে আসেন রিট আবেদন কারী। 


রায়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মহাসড়ক থেকে সমস্ত আবর্জনা অপসারণের নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি  সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মহাসড়কের মধ্যে সব ধরনের মাটি ভরাট বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়। 


জানা গেছে,  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, পারিজাত, সানারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়কের পাশে অহরহ ফেলা হতো ময়লা-আবর্জনা। নির্দিষ্ট ডাম্পিং থাকার পরও কেন মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলা হতো তা নিয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানা গেছে, মূলত মহাসড়কের পাশে সওজের পরিত্যক্ত জমি দখলের কৌশল হিসেবে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ময়লা আবর্জনা ফেলত। 


জানা গেছে, সাইনবোর্ড পারিজাতের সামনে এবং একটি বেসরকারি হাসাপাতালের সামনে দীর্ঘ দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছে একটি সিন্ডিকেট। স্থানীয় লোকজনের আপত্তির মুখে তারা ময়লা ফেলার কাজ চালিয়ে আসছে। দিনে ও রাতের আঁধারে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা।
ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে দেয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পারিজাতের সামনে গভীর রাতে ফেলা হচ্ছে ময়লা। এক দিকে ময়লা ফেলার ভ্যান ময়লা ফেলছে। আর তাদের পাহারা দিচ্ছে কিছু দুষ্কৃতকারী। এদের ভয়ে ভুক্তভোগীরা কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না। ভুক্তভোগী আলম শেখ জানান, ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে আমাদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। হাইওয়ে পুলিশের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ দিনে হয়, আবার রাতে ময়লা সিন্ডিকেট আবারো ময়লার স্তূপ জমায়। রাতের আঁধারে অনেকটা চুরি করে ময়লা ফেলার কারণে এদের কেউ চিহ্নিত করতে পারে না।


ভুক্তভোগীরা জানান, সাইনবোর্ড মহাসড়কে পাশে প্রো-অ্যাকটিভ বৃহৎ হাসপাতাল। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে রোগী নিয়ে আসা হয়; কিন্তু হাসপাতালের অদূরে বিশাল ময়লার ভাগাড়। এতে করে দুর্গন্ধে টিকে থাকা দায়। অপর দিকে মশার উৎপাত বেড়েছে। মনে হচ্ছে হাসপাতালের সামনেই ডেঙ্গু মশার চাষ হচ্ছে। 
 

সম্পর্কিত বিষয়: