নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪

১৪ বছরেও সম্মেলন হয়নি

নারায়ণগঞ্জ যুবলীগ ৫ বছর ধরে কান্ডারীবিহীন, আলোচনায় নতুন নেতৃত্ব

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০৪:৩০, ২৪ নভেম্বর ২০২২

নারায়ণগঞ্জ যুবলীগ ৫ বছর ধরে কান্ডারীবিহীন, আলোচনায় নতুন নেতৃত্ব

দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কান্ডারীবিহীন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ। তারউপর চৌদ্দ বছর ধরে সম্মেলন হচ্ছে না আওয়ামীলীগের অন্যতম এই সহযোগি সংগঠনের। ফলে মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে সম্পৃক্ত হওয়ায় কান্ডারীবিহীন হয়ে আছে জেলা যুবলীগ। গত ৫ বছর ধরে তারা জেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে করে এই ৫ বছরে জেলা যুবলীগের ব্যানারে দলীয় কোন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি। যার কারণে জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড মুখ থুবড়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবেও জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি গঠনের কার্যকরী প্রক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে যুবলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে।

 

 


দলীয় তথ্যমতে, গত বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে (২০০৫ সালে) রাজনৈতিক ভাবে কোনঠাসা থাকা অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে আলহাজ্ব আব্দুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল নির্বাচিত হন। সেই তারাই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। হয়নি কোন সম্মেলন। এতে আসেনি নতুন নেতৃত্ব। এরই মধ্যে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে ঘোষিত জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটিতে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো: বাদলকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এবং ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর জেলা বিএনপির পুর্ণাঙ্গ কমিটিতে জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদিরকে জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি করা হয়। জেলা যুবলীগের এই দুই শীর্ষ নেতা জেলা আওয়ামীলীগে পদায়ন হলেও তারা যুবলীগের শীর্ষ পদ থেকে অব্যাহতি নেননি। আবার তারা যুবলীগের কর্মকসূচিও পালন করেননি। মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা যুবলীগ বর্তমানে কান্ডারীবিহীন হয়ে আছে। যার কারণে জেলা যুবলীগ ও জেলার আওতাভুক্ত থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সাংগঠনিক অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। কবে জেলা যুবলীগ অভিভাবক নির্ভর হবে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না নেতাকর্মীরা। 

 


এদিকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর জেলা  যুবলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারির মধ্যে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। নির্বাচনে পৃথক ভাবে জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত বাদল চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়। এবং চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে দুইজনই পরাজিত হন। তবে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আব্দুল কাদির ও শহীদ বাদল দুজনই ছিলেন শামীম ওসমানের বলয়ে। উপজেলা পরিষদের বিরোধের পরেও শামীম ওসমানের সঙ্গে দেখা গেছে দুজনকে। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ছিলেন এমপি শামীম ওসমান ও বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। ওই নির্বাচনে শহীদ বাদল ছিলেন শামীম ওসমানের পক্ষে ও আব্দুল কাদির ছিলেন আইভীর পক্ষে। এতে করে শামীম ওসমান ও আইভীকে ঘিরে দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে জেলা যুবলীগ। যা অদ্যাবদি বিদ্ধমান।

 


ওদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন শেষ হওয়ার পর আলোচনা শুরু হয় জেলা যুবলীগের সম্মেলন হবে এবং নতুন কমিটি আসছে। কিন্তু নতুন নেতৃত্বে কারা আসছে তা নিয়ে আলোচনা চলমান। এরমধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপুকে সভাপতি ও সাফায়েত আলম সানিকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা যুবলীগের কমিটি হতে পারে। আবার কেউ বলছেন, নিপুকে সভাপতি করে অন্য কাউকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি আসতে পারে। আবার কেউ বলছেন সানিকে সভাপতি করে অন্য কাউকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি আসতে পারে। এই দুজন ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন জানে যুবলীগ নেতা আলম বিপ্লব, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ মহসীন, ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ বেশকজন যুবলীগ নেতা। তবে  তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন নতুন কমিটি হলেই প্রাণ ফিরে পেতে পারে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ।
 

সম্পর্কিত বিষয়: