নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

মঙ্গলবার,

২১ মে ২০২৪

বন্দরে যেতে আওয়ামীলীগ নেতাদের কি ভিসা লাগবে?

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২১:০২, ১০ মে ২০২৪

বন্দরে যেতে আওয়ামীলীগ নেতাদের কি ভিসা লাগবে?

শেষ পর্যন্ত সকল জল্পনার-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট উত্তাপ-উত্তেজনা ছিল। রীতিমত আতঙ্ক তৈরী করা হয় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের বক্তব্যে এই আতঙ্ক ছড়ায়। কিন্তু জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নেতৃত্বে আইনশৃংখলাবাহিনীর কঠোর অবস্থানে সুবিধা করতে পারেনি প্রভাবশালীদের প্রার্থী। শুধু তাই নয়, এমন কথাও তারা বলেছেন, ৮ মে প্রমানিত হবে, বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন মিনি পাকিস্তান হবে না বাংলাদেশে থাকবে। রাজকার পুত্র মাকসুদ হোসেনকে নির্বাচন করলে বন্দর উপজেলা মিনি পাকিস্তান হয়ে যাবে। আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পাটির শীর্ষ নেতাদের এমন প্রচারণা ছিল টক অব দ্যা বন্দর। 


সবশেষ ৩ মে বিকালে ও সন্ধ্যায় বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদের পক্ষে নির্বাচনী সভায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, তিনজন মুক্তিযোদ্ধা আমার সামনে, তিনজনই আমার বড় ভাই। এখন ৮ তারিখে প্রমাণিত হবে এ অঞ্চলটা বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন মিনি পাকিস্তান হবে না বাংলাদেশে থাকবে এর জন্যেই আমি এসেছি। এ অঞ্চলকে ১৯৭১ সনে যারা রক্তে রঞ্জিত করেছে। ব্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষা নদীতে হাজার হাজার লাশ ভাসিয়ে দিয়েছে, যাদের সহযোগিতায় তাদের সন্তানরা আজকে মিনি পাকিস্তান বানানোর চিন্তা করছে। আমরা কিন্তু তাদের সকল অপকর্মের সবকথা জানি। 


খোকন সাহা আরও বলেন, অনেকে আবার টাকার গাট্টি নিয়ে নেমেছেন। ৮ তারিখে দেখব মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি পরাজিত হয় কিনা। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যদি পরাজিত হয় আমাদের কোন ক্ষতি হবে না, ক্ষতি হবে এই অঞ্চলের। কারণ এ অঞ্চলটা হয়ে যাবে মিনি পাকিস্তান। 


নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মনে রাখবেন এ নির্বাচন ৭১ সালের চেয়েও ভয়াবহ নির্বাচন। রাজাকারের বংশ বিস্তার অনেক বড় হয়ে গেছে। কলা কাছ থেকে বটগাট বট গাছ থেকে জোড়া বটগাছে রূপান্তরিত হয়েছে। আর কিন্তু হতে দেওয়া যায় না। আপনারা আল্লাহর দিকে চেয়ে মাঠে নামবেন, রাজাকারের বংশ নির্বংশ হয়ে যাবে। এতদিন ওরা মুছাপুরটাকে মিনি পাকিস্তান বানিয়ে দিয়ে ছিল। এবার ওরা চায় পুরো বন্দর উপজেলাটাকে পাকিস্তান বানাতে। শুধু আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ বন্দর উপজেলাটাকে মিনি পাকিস্তান বানাবেন না। আপনারা নামুন, ওই রাজাকারের বংশধরদেরকে উৎখাত করতে হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এ রশিদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু সহ আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।


কিন্তু ৮ তারিখ কি হলো? ৮ তারিখ মানুষ আওয়ামীলীগ নেতাদের বক্তব্য, আকুতি, মিনুতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদকে বিজয়ী করেনি। বিজয়ী করেছে রাজাকার পুত্র মাকসুদ হোসেনকে। শুধু বিজয়ী করেনি, এম এ রশিদের চেয়ে ১৫ হাজার ভোট বেশি দিয়েছে মাকসুদকে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামীলীগ পরাজিত হয়েছে বন্দর উপজেলা নির্বাচনে। আওয়ামীলীগ নেতাদের কথা অনুযায়ী ভোটাররা মিনি পাকিস্তান বানিয়ে দিয়েছে বন্দরকে। এখন মিনি পাকিস্তান বন্দরে যেতে আওয়ামীলীগ নেতাদের কি ভিসা লাগবে? মুখরোচক এমন কথা আলোচনা হচ্ছে পথে ঘাটে।


প্রসঙ্গত; নির্বাচনে মাকসুদ হোসেন আনারস প্রতীক নিয়ে ২৯ হাজার ৮৭৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এম রশিদ দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৭৪ ভোট।

আরও পড়ুন:বন্দরে রশিদের ভরাডুবির নেপথ্যে