
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২৫ মে) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর মহসিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানির সময় গাজীপুর কাশিমপুর মহিলা কারগার থেকে কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তা আদালতে আইভীকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত রাখা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিনারুল ইসলাম হত্যা মামলায় পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে, দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি এডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন জানান, আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই রিমান্ডের মাধ্যমে মিনারুলকে কীভাবে গুলি করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করা হয়েছে সেটা উদঘাটিত হবে।
আইভীর পক্ষের আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, মিনারুল হত্যা মামলায় আদালতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে । সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এই মামলায় আইভীকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সাবেক মেয়রকে জড়ানো হয়েছে।
শুনানীকালে বিজ্ঞ আদালতে মেডিকেল রির্পোট আদালতে দাখিল করার পর আদালত তা আমলে না নিয়ে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ৯ মে ভোরে শহরের দেওভোগ এলাকা থেকে মিনারুল হত্যা মামলায় আইভীকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। পরে জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালত আইভীকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১১টার দিকে পুলিশের একটি দল শহরের দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত আইভীর বাড়ি চুনকা কুটিরে প্রবেশ করেন। এ সময় আইভীর গ্রেপ্তারের খবরে স্থানীয় বাসিন্দা ও তার নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে এলে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় আইভীর বাড়ির দিকে যাওয়ার দুটি রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আইভীর সমর্থকরা। আশপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে আইভীর বাড়ির দিকে রওয়ানা দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
পরে শুক্রবার (৯ মে) ভোরে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পথিমধ্যে তাকে বহনকারী গাড়ি বহরে হামলা করে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পরে তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জের পোশাকশ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তুহিন হত্যা ও নাদিম হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ৬টি মামলা রয়েছে।