
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গ্যাস বিস্ফোরণে শিশুসহ একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ হয়েছে। দগ্ধরা হলেন- গৃহকর্তা মানব চৌধুরী (৪০), তার স্ত্রী বাচা চৌধুরী (৩৮), তাদের তিন কন্যা তিন্নি (১২), মুন্নি (১৪) ও মৌরি (৬)।
তাদের মধ্যে মানবের শরীরের ৭০ শতাংশ, তার স্ত্রীর ৪৫ শতাংশ, কন্যা তিন্নির ২২ শতাংশ, মুন্নির ২৮ শতাংশ এবং মৌরির ৩৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানান জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে বিসিক শিল্পাঞ্চলের ৩ নম্বর গলির একটি তিনতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। বিষ্ফোরণের পর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসাপাতালে নিয়ে যান।
তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া প্রতিবেশী সবিনয় দাস বলেন, মানব একটি ওষুধ কোম্পানিতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে চাকরি করতো। পরিবার নিয়ে বাড়িটির নিচতলায় ভাড়া থাকতো। একটাই ঘর, সেটার ভেতরেই রান্নাঘর ও বাথরুম। ভোরে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণে তারা সবাই পুড়ে যায়। আমি তাড়াতাড়ি গাড়ির ব্যবস্থা কইরা হাসপাতালে আনি।
তিনি আরও জানান, তাগো কারও অবস্থাই ভালো না। ডাক্তার রক্ত জোগার করতে বলছে। আমি রক্তের লাইগা দৌঁড়াইতাছি।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কাঁচপুর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর বলেন, ঘরটির ভেতরেই রান্নার চুলা। একটি গ্যাস সিলিন্ডার সেখানে পাওয়া গেছে। চুলার সঙ্গে গ্যাসের অন্য কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি।
নিচতলায় ঘর হওয়াতে চুরির ভয়ে হয়তো রাতে দরজা-জানালা বন্ধ ছিল এবং সিলিন্ডারের লাইনের লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস জমে চেম্বারের মতো হয়ে যায় এবং ভোরে আগুনের কোনো উৎস পেয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, নিন্মমানের ও ত্রুটিপূর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহারের কারণে শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জে বাড়ছে গ্যাস দূর্ঘটনা। মানুষ হতাহতের পাশপাশি সম্পদের ও ক্ষতি সাধন হচ্ছে। দিনে দিনে গ্যাস দূর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে লাশের মিছিল বাড়লেও মানুষ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে সতর্ক হচ্ছেনা।